বাগডোগরা বিমানবন্দর। ফাইল চিত্র।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের জন্য বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা নিয়োগ করতে টেন্ডার করা হল। গত সপ্তাহে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এএআই) দিল্লির সদর দফতর থেকে টেন্ডারটি করা হয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, একেবারে কাজের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে টেন্ডারটি ছাড়া হয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিল তা বন্ধ করা হচ্ছে। তার পরে সংস্থা বাছাই হতেই সাত মাস নকশা এবং পরিকল্পনা তৈরি জন্য রাখা হয়েছে। এর পরের ৩০ মাস বা আড়াই বছরে নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। সবশেষে দু’মাস পরিকল্পনা ও তৈরি পরিকাঠামো মিলিয়ে দেখার জন্য রাখা হয়েছে।
বিমানবন্দর অধিকর্তা সুব্রমণী পি বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, এ বছরের শেষ নাগাদ বাগডোগরায় কাজ শুরু হয়ে যাবে। ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া দিয়ে নতুন বিমানবন্দর তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেল। দেশের অন্যতম আধুনিক পরিকাঠামোযুক্ত বিমানবন্দর হতে চলেছে বাগডোগরা।’’
এরমধ্যেই আজ, সোমবার থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল অবধি বিমানবন্দরটি রানওয়ে সংস্কারের জন্য পুরোপুরি বন্ধ রাখা হচ্ছে। যা নিয়ে যাত্রীদের থেকে শুরু করে শিল্প, পর্যটন মহলে ক্ষোভ হয়েছে। দেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের তালিকায় ১৫ নম্বরে থাকা এই বিমানবন্দর দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখা নিয়ে নানা প্রশ্নও উঠেছে। তার উপরে রাজ্য সরকারের কাছে বিভিন্নভাবে আবেদন পাঠানো হলেও টানা বিমানবন্দর বন্ধ রাখা নিয়ে রাজ্যও চুপচাপ থেকেছে। এরমধ্যে তিনদিন বাগডোগরার বায়ুসেনার অধীনে থাকা রানওয়ে ফাটলের জের দিনভর যাত্রীদের দুর্ভোগও পোহাতে হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রের, সম্প্রতি দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা জানান, বাগডোগরা বিমানবন্দরের নতুন কাজের বরাদ্দ ৬০০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ১৩১২ কোটি টাকার উপর নেওয়া হয়েছে। বিমানমন্ত্রকে কথা বলে দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়ার কথাও তিনি জানিয়ে ছিলেন। এএআই-র দিল্লির কেন্দ্রীয় দফতরের এজিএম (ইঞ্জিনিয়ারিং-সিভিল) এই কাজের টেন্ডারের নির্দেশ দিয়েছেন। আপাতত ঠিক রয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরের ধাঁচেই নতুন বিমানবন্দরটি তৈরি হবে। লোকসভা ভোটের আগে অনেকটাই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে মন্ত্রকের। শুধু নতুন টার্মিনাল নয়, একেবারে খোলনলচে পাল্টে ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরে ঢোকার নতুন একাধিক লেনের রাস্তা, সৌরশক্তির ব্যবহার, সবুজ গাছপালায় নতুন টার্মিনালকে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী ৩০ বছরের বিমানবন্দরের পরিস্থিতি, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের চাহিদা মেটানোর দিকে নজর রেখেই পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি হবে। ১৫ বছরের প্রাথমিক পরিকাঠামোর কাজ শেষ হলে পরের পর্যায়ে একাধিক হোটেল তৈরির জমি, বাণিজ্যিক প্লট, এএআই ও সিআইএসএফের নতুন আবাসন তৈরির পরিকল্পনা তৈরি করার বিষয়টি টেন্ডারে রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয়, ১ লক্ষ স্কোয়ার মিটারের নতুন টার্মিনাল ভবন তৈরি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন বিমানবন্দরে একসঙ্গে ৫টি বিমান দাঁড়াতে পারে। এই সংখ্যাটা তিনগুণ বাড়িয়ে ১৬টি হবে।