মে মাসেই বায়রনকে নিরাপত্তা দিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি। —ফাইল চিত্র।
সোমবার কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাইরন বিশ্বাস। ঘাটালে গিয়ে জোড়াফুল শিবিরে যোগদানের পুরস্কার মিলেছে হাতেনাতে। যোগদানের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাসভবন-সহ নিরাপত্তরক্ষী এবং তাঁর জন্য দেহরক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রাপ্তিযোগের আগেও সরকারের তরফে জোড়া প্রাপ্তি হয়েছিল বাইরনের।
২ মার্চ সাগরদিঘির উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২২ হাজার ৯৮০ ভোটে পরাজিত করে জয়ী হোন বাইরন। এর পর দীর্ঘ সময় শুধুমাত্র বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাঁকে। এমনকি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে গিয়ে নিজের শপথগ্রহণের জন্য দরবার করেছিলেন বাইরন। দেখা করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও দ্রুত শপথের জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। শেষে ২২ মার্চ তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়।
তার পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে কিছুটা হলেও নিষ্প্রভ ছিলেন এই বিধায়ক। আর সোমবার ঘাটালে গিয়ে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদানের পরেই ফের সংবাদের শিরোনামে আসেন বাইরন। তারপর তাঁর জন্য পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তার আগেই বিধানসভার দু’টি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে জায়গা পেয়েছিলেন সাগরদিঘির বিধায়ক। ‘শ্রম’ ও ‘পেপার লেড অন দি টেবল’ স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তাঁকে জায়গা দেওয়া হয়। যদিও, এই বিষয়টি বাইরনের পুরনো দল কংগ্রেস নেতৃত্বকেও জানানো হয়নি বলেই খবর। তবে বিষয়টি এ ভাবে দেখতে নারাজ বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। তাদের কথায়, বিধানসভায় বিধায়ক হয়ে এলেই কয়েকটি কমিটিতে জায়গা দেওয়া বাধ্যতামূলক। সেই নীতি মেনেই বাইরনকেও জায়গা দেওয়া হয়েছে।
তবে কটাক্ষ করেই বিজেপি পরিষদীয় দলের বক্তব্য, কংগ্রেস বিধায়ককে ভাঙানোর চেষ্টা যে অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল তা এই প্রাপ্তিযোগ প্রমাণ করে দিয়েছে। আগামী দিনে হয়তো আরও অনেক প্রাপ্তি হবে বাইরনের। সোমবার তৃণমূলে যোগদানের পরেই বাইরনের বাড়িতে ৮ জন সশস্ত্র কনস্টেবল, ২ জন এএসআই পদমর্যাদার আধিকারিক নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে ৩ জন কনস্টেবল, ১ জন এএসআই ও ১ এসআইকে নিয়োগ করা হয়েছে সর্ব ক্ষণের জন্য। বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পর নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বাইরন। তাই নিরাপত্তা পেতে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন তিনি। মে মাসেই বায়রনকে নিরাপত্তা দিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই নির্দেশের দিন পনেরো পরেই নিরাপত্তা পেলেন বাইরন। বিজেপির কটাক্ষ, তৃণমূলে যোগদান না করলে পুলিশি নিরাপত্তা পেতে আরও অপেক্ষা করতে হত সাগরদিঘির বিধায়ককে।