ফাঁকাই পড়ে রয়েছে দোকান। মঙ্গলবার মিষ্টি উৎসবে। নিজস্ব চিত্র
মিষ্টি হাব জনপ্রিয় করে তুলতে সেখানে শুরু হয়েছে মিষ্টি উৎসব। সাত দিনের উৎসবের মধ্যে ছ’দিন পার। দু’দিন ধরে সরকারি বাস সেখানে দাঁড় করানোর ব্যবস্থাও হয়েছে। কিন্তু মিষ্টি উৎসবে তাঁরা মাছিই তাড়াচ্ছেন, দাবি ব্যবসায়ীদের।
২০১৭-র ৭ এপ্রিল আসানসোলে বর্ধমান জেলা ভাগের মঞ্চ থেকে মিষ্টি হাবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবি, সে ভাবে পসার জমেনি এখানে। মিষ্টি হাবকে জনপ্রিয় করতে উৎসবের পরিকল্পনা করে জেলা প্রশাসন। সাত দিনের উৎসব শুরু হয় ১৬ জানুয়ারি। বিভিন্ন মিষ্টির প্রস্তুতি প্রদর্শন, মিষ্টির অজানা তথ্য নিয়ে বিশেষ গ্যালারি, চিত্র প্রদর্শনীও রয়েছে সেখানে। সেই সঙ্গে মিষ্টি সংক্রান্ত কুইজ ও প্রতিদিন অনুষ্ঠানের আসরও আয়োজন করা হয়।
কিন্তু এত সব করেও ছবিটা পাল্টায়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তাঁরা দাবি করেছিলেন, সরকারি বাস মিষ্টি হাবের সামনে দাঁড় করাতে হবে। সেই দাবি মেনে সোমবার থেকে বাস দাঁড় করানো হয়। মঙ্গলবার মিষ্টি হাবে দিয়ে দেখা যায়, এসবিএসটিসি-র আইএনটিটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ ঘোষ সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে জাতীয় সড়কে হাত দেখিয়ে সরকারি বাস দাঁড় করাচ্ছেন। এক কর্মী বিবেকানন্দ পাল জানান, সোমবার থেকে সব ডিপোয় জানানো হয়েছে, বাস মিষ্টি হাবে দাঁড় করাতে হবে।
কিন্তু এ দিন ওই সব বাস থেকে যাত্রীদের বিশেষ নামতে দেখা যায়নি। ফলে, লাভ হয়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কৌশিক ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘দিনে একশো টাকার বিক্রিও হচ্ছে না। বাস এলেও কোনও যাত্রী উৎসাহ দেখাচ্ছেন না।’’ একই দাবি রাজু ঘোষ, লালু দাস, রাজু হাটিদের।
যাত্রীরা এখানে নামছেন না কেন? ব্যবসায়ীদের দাবি, মিষ্টি হাবের ঠিক আগে শক্তিগড়ে বাস দাঁড়াচ্ছে। সেখানেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন যাত্রীরা। প্রশাসনের তরফে শক্তিগড়ে না দাঁড়িয়ে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে মিষ্টি হাবে বাস দাঁড় করানোর কথা বলা হলেও অনেক চালক তা মানছেন, অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
এক মিষ্টি ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ব্রিগেড সমাবেশের দিন সেখানে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মিষ্টি রেখেছিলেন বিক্রেতারা। কিন্তু ২৫ শতাংশও বিক্রি হয়নি। অথচ, সোমবার রাতে দিঘা-আসানসোল রুটের একটি বাস দাঁড়ালে ভাল বিক্রি হয়।’’ তাঁর মতে, শক্তিগড়ে সব বাস দাঁড় করানো বন্ধ করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে নিয়ম করে এসবিএসটিসি-র ১৩টি ডিপোর দু’টি করে বাসকে মিষ্টি হাবে দাঁড় করানোর ব্যবস্থা করলেই ভাল ব্যবসা হবে। তা ঠিকঠাক না হাওয়ায় ব্যবসা লাটে উঠছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।
পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি শম্পা ধারা জানান, কেন বাসের যাত্রীরা মিষ্টি হাবে নামছেন না, তা খতিয়ে দেখা হবে। তাঁর দাবি, বিষয়টি নতুন বলে সমস্যা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তা মিটে যাবে।