ছবি: সংগৃহীত।
বিধানসভা ভোটে রাজনৈতিক মঞ্চ মাতিয়েছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগান। বিজেপি-কে হারাতে তৃণমূলের অন্যতম হাতিয়ার হয়েছিল এই স্লোগান। এ বার সেই স্লোগান শোনা যাবে বাংলার যাত্রা মঞ্চে। সেই যাত্রার অন্যতম উদ্যোক্তা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পূর্ব বর্ধমান জেলার এই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার যাত্রার প্রতি অনুরাগের কথা কারও অজানা নয়। ছাত্রাবস্থা থেকেই যাত্রার সঙ্গে যুক্ত তিনি। কখনও তিনি থাকেন পালাকারের ভুমিকায়, কখনও আবার থাকেন অভিনেতার ভুমিকায়। কখনও আবার তাঁকে দেখা যায় যাত্রাদলের প্রযোজক হিসেবে। সেই প্রযোজক হিসেবে শীতের মরসুমেই তিনি আনতে চলেছেন একটি নতুন পালা। যেখানে শ্রী চৈতন্য অপেরা নামাঙ্কিত তাঁর পেশাদার যাত্রাদলটি এ বার মঞ্চস্থ করবে ‘কান্না ভেজা মায়ের আঁচল’ নামের পালা।
সেই যাত্রায় ব্যবহার করা হবে ‘খেলা হবে’ সংলাপ। নতুন এই যাত্রাপালাটি লিখেছেন বর্ষীয়ান পালাকার অশোক বসু। পালাকারকে যাত্রা লেখায় সহায়তা করেছেন মন্ত্রী স্বপন। যাত্রাটিতে মায়ের নামভূমিকায় অভিনয় করবেন অভিজ্ঞ যাত্রাশিল্পী রুমা দাশগুপ্ত। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যে মন্ত্রীর যাত্রাদলের প্রধান বলেই কী এমন রাজনৈতিক স্লোগানের ব্যবহার হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী স্বপন বলেন, ‘‘আমি এই পেশাদার যাত্রাদলের সঙ্গে যুক্ত বলেই যে খেলা হবে সংলাপ রাখা হয়েছে, বিষয়টি তেমন নয়। পালাকার নাটকের প্রয়োজন বোধ করেই এই সংলাপটি ব্যবহার করেছেন।’’
রাজ্য প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘পরমহংসদেব বলতেন, যাত্রা লোকশিক্ষার মাধ্যম। সমাজ সংস্কারের বহু বার্তা এই মাধ্যমে গ্রামীণ জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। দেশের কৃষক সমাজ লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনল। আমাদের যাত্রায় এমন দৃশ্য দেখিয়েই 'খেলা হবে' সংলাপ রাখা হয়েছে।’’ যাত্রা প্রসঙ্গে বিস্তারিত না জানালেও, একটি দৃশ্য প্রসঙ্গে জানিয়েছেন মন্ত্রী। যাত্রা মঞ্চে এক কৃষক তাঁর সংলাপে জোতদার-জমিদারদের উদ্দেশ্য করে বলবেন, ‘কৃষকের অধিকার যখন হরণ হয়, তখন খেলা হবে। গরিব কৃষককে যখন তাঁর মাটি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা হবে, তখনও খেলা হবে।’ আপাতত পালা সাজানোর কাজ চূড়ান্ত, এখন বায়নার অপেক্ষায় যাত্রাদলটি।