আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ছবি সৌজন্য টুইটার।
রবিবার ফুরফুরা শরিফে এসে আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। কলকাতা ছাড়ার আগে রাজনৈতিক জল্পনা বাড়িয়ে ওয়াইসির ঘোষণা, আব্বাসের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বাংলায় পথ চলবে মিম। গত বছর অগস্ট মাসে ভাঙড়ে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাসের ওপর আক্রমণ হয়। আব্বাস অনুগামীরা অভিযোগ করেন, তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লার নির্দেশেই এই হামলা হয়েছে। এই হামলায় প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। তারপরেই নতুন রাজনৈতিক দল তৈরির ঘোষণা করে দেন ফুরফুরা শরিফের এই পীরজাদা। রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে কথা শুরু হয় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে। বেশ কয়েক দফায় অলোচনাও হয়েছিল দু’দলের সঙ্গে। সম্প্রতি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ফুরফুরা শরীফে গিয়ে আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করে আসেন। বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রামজের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন আব্বাস অনুগামীরা। একুশের ভোটে জোট নিয়ে আলোচনাও হয় ফব বিধায়ক ও আব্বাসের মধ্যে। কিন্তু রবিবার ওয়াইসির ফুরফুরা শরীফে এসে আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করে মিমের সঙ্গে জোট ঘোষণা করে দেওয়ার পরেই আর ভোটে সমঝোতার আলোচনা নিয়ে এগিয়ে যেতে নারাজ ফরওয়ার্ড ব্লক।
আব্বাসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে ফব বিধায়ক আলি ইমরান বলেছেন, ‘‘আসাদউদ্দিনের দল মিমের সঙ্গে নীতিগত কারণে আমরা জোট করতে পারব না। এই দলের ইতিহাস জানলে দেখা যাবে, দেশ বিভাজনের সময় হায়দরাবাদের নিজাম এই দলটি তৈরি করেছিলেন পাকিস্তানে যুক্ত হওয়ার জন্য। দলটি তৈরি হয়েছিল কিছু মানুষকে উজ্জীবিত করে হায়দরাবাদকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানে যুক্ত হওয়ার জন্য। শেষে ভারত সরকারের চাপে তাঁরা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি। বাংলায় যদি এই দলটির নাম ব্যাখ্যা করো, তাহলে দেখা যাবে, এই দলটি মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষার কথা বলে। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের কথার সম্পূর্ণ অর্থ মুসলিম ঐক্য ও তাঁদের অধিকার রক্ষা। নেতাজির আদর্শে যাঁরা আমরা ফরওয়ার্ড ব্লক করি বা বামপন্থী রাজনীতি করি, তাঁরা কখনও একটি সম্প্রদায়ের কথা বলতে পারি না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ভারতের মানুষের অধিকার রক্ষায় রাজনীতি করি। এক্ষেত্রে সকলকে নিয়ে আমরা চলতে চাই। ওদের (আব্বাসের) সঙ্গে কেউ যুক্ত হলে, আমরা তাঁদের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারব না।’’ বাম শিবিরের আব্বাস-মিম জোটে অনীহা হলেও, রাস্তা খুলেই রাখছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। তাঁর কথায়, কার সঙ্গে ভোটে সমঝোতা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি।’’ প্রসঙ্গত, আগামী ৮ জানুয়ারি ফুরফুরা শরীফ যাবেন মান্নান। সেখানে আব্বাসের সঙ্গে কথা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। তাই পরস্পরের হাত ধরে রাজনৈতিক জোট করতে রাজি হলেও, আব্বাসের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতায় যেতে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে হচ্ছে কাঁটা মিম।