বৈঠক সেরে বাড়ি ফেরার পথে সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের নওগা পঞ্চায়েতের তুরকা গ্রামের ঘটনা। গুরুতর জখম অবস্থায় চন্দন গুছাইত নামে সিপিএমের ওই নেতা মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার তৃণমূলের ১৩ জন কর্মী-সমর্থকের নামে চন্দনবাবু সবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ঘটনায় দায় অস্বীকার করেছে শাসক দল। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল শুক্রবার রাতে?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা-সহ নানা অভিযোগে সবংয়ে অবস্থান ছিল সিপিএমের। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই কর্মসূচির প্রস্তুতিতেই গিয়েছিলেন চন্দনবাবু। বৈঠক সেরে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তুরকা গ্রামে তাঁকে ঘিরে ধরে বেশ কয়েকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে চন্দনবাবু বলেন, “মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যেতেই হাতে-পায়ে ও মাথায় লোহার রড, লাঠি দিয়ে মারধর করছিল কয়েকজন যুবক। আমার চিৎকার শুনে পরিচিত একজন আসেন। তিনিই সাইকেলে চাপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যান।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকায় তৃণমূলের সন্ত্রাসে ভোট দিতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সে বার পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের হাতছাড়া হলেও নওগা গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয় বামেরা। আর তুরকা বুথটিতে জয়ী হন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী পুলক দাস। সেই সময় থেকেই এলাকায় সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়। আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তুরকা ও মালপাড় বুথের দায়িত্বে থাকা সিপিএমের জোনাল সদস্য চন্দন গুছাইত। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে তুরকা বুথে এগিয়ে রয়েছে সিপিএম। চন্দনবাবুর অভিযোগ, সেই আক্রোশেই তৃণমূলের হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অমলেশ বসু বলেন, “চন্দনবাবু সিপিএম কর্মী। এটাই তাঁর অপরাধ। আমাদের জোনাল সদস্য চন্দনকে তৃণমূলের লোকেরা খুন করতে চেয়েছিল।” ঘটনার দায় অস্বীকার করে সবংয়ের তৃণমূলের নেতা তথা জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “চন্দন গুছাইত ২০০১ সালের একটি খুনের ঘটনায় জড়িত। তা নিয়ে এলাকাবাসীর একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। আমাদের কর্মীরা নয়, আমার অনুমান দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে।”