ফেরাতে হবে বাকি ঘরছাড়াদেরও। সম্প্রতি এই মর্মে প্রশাসনের কাছে ফের দাবি জানালেন চন্দ্রকোনার সিপিএম নেতৃত্ব।
মাস খানেক আগে দলীয় নেতাকর্মীদের ঘরে ফেরাতে ঘাটালের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন সিপিএম নেতৃত্ব। উদ্যোগী হয় প্রশাসনও। প্রশাসনের দাবি, চন্দ্রকোনা ১ ও ২ দু’টি ব্লকের প্রায় দুশো ঘরছাড়ার মধ্যে প্রায় তিরিশ জনকে ঘরে ফেরানো গিয়েছে। বাকিদেরও ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক অদীপ রায় বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত বাকিদের ফেরানো হবে।”
সিপিএমের দাবি, লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূলের অত্যাচারে কয়েক’শো নেতাকর্মী ঘরছাড়া হন। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ তৃণমূলের দাবি মতো জরিমানা দিয়ে, নানা ফতোয়া মেনে নিয়ে ঘরে ফিরতে পারলেও অনেকেই এখনও ঘরছাড়া। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা জানান, ঘর-জমি থেকে দূরে অত্যন্ত দুরাবস্থার মধ্যে দিয়ে তাঁদের দিন কাটাতে হচ্ছে বলে খবর। এঁদের বেশির ভাগই কৃষিজীবী। চাষাবাদও করতে না পারায় আর্থিক অনটনে ভুগছেন অনেকেই।
এই পরিস্থিতিতে কী ভাবছেন ঘরছাড়ারা? কোনও রাখ ঢাক না রেখেই সিপিএমের এক নেতা বললেন, “আমরা আর ক’দিন দেখব। না হলে সবাই জোটবদ্ধ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নবান্নে গিয়ে ধর্নায় বসব। এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।” পুড়শুড়ির এক সমর্থকের কথায়, “আমাদের সব কিছু থেকেও এখন আর কিছু নেই!”
সিপিএমের চন্দ্রকোনা ১ ও চন্দ্রকোনা ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক বিদ্যুৎ রায় এবং গুরুপদ দত্তের অভিযোগ, “তৃণমূলের নির্দেশে এলাকার বান্দিপুর, কুঁয়াপুর, বসনছড়া, জাড়া-সহ প্রায় সাতটি পঞ্চায়েতের গোটা তিরিশেক গ্রামে প্রায় প্রতিদিনই মারধর, জরিমানা, লুঠপাট, দলীয় অফিস দখল-সহ নানা অনৈতিক কাজ নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু হলেই আমরা পুলিশকে জানাই। কিন্তু পরিস্থিতির বদল হয় না।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য: “আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি অন্য দল করার জন্য কেউ ঘরছাড়া থাকবে সেটা দলের সংস্কৃতি নয়। সিপিএম তালিকা দিয়ে থাকলে পুলিশ তাঁদের ঘরে ফেরাক।” তিনি বলেন, “পুলিশ নিয়ে নয়, ঘরছাড়ারা নিজেরাই ঘরে ফিরুন। সাধারণ দিনযাপন করুন। চাষ বা ব্যবসা করুন। যদি দলের কোনও পক্ষ থেকে বাধা পান, তা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মী বা নেতার নাম করে থানায় এফআইআর করুন। আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করব না।”
পুলিশ জানিয়েছে, ঘরছাড়াদের ফেরানোর কাজ চলছে। সমস্যা এড়াতে চলছে লাগাতার টহলও।