সোমবার কেশপুরেও সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী

ফের মুখ্যমন্ত্রীর সফর-সূচির হেরফের হল। শুধু কেশিয়াড়ি-গড়বেতা নয়, আগামী সোমবার কেশপুরেও সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে এই বার্তাই পাঠিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫৫
Share:

ফের মুখ্যমন্ত্রীর সফর-সূচির হেরফের হল।

Advertisement

শুধু কেশিয়াড়ি-গড়বেতা নয়, আগামী সোমবার কেশপুরেও সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে এই বার্তাই পাঠিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়। দলের শীর্ষ নেতার বার্তা পেয়ে কেশপুরে সভার প্রস্তুতিও শুরু করেছেন জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “সোমবার জেলায় এসে দলনেত্রী তিনটি সভা করবেন। কেশিয়াড়ি, গড়বেতা এবং কেশপুরে। সেই মতোই প্রস্তুতি চলছে।” দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “তিনটি সভাতেই বিপুল জনসমাগম হবে। এখন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখছি। সভা যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তার জন্য তিন এলাকাতেই সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

শুক্রবার গড়বেতায় গিয়ে প্রস্তাবিত সভাস্থল ঘুরে দেখেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি-জেলা চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ছিলেন তৃণমূলের দুই জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ-নির্মল ঘোষ সহ ব্লক নেতৃত্ব। এ দিন গড়বেতায় এক কর্মিসভাও হয়।

Advertisement

রাজ্যে পালাবদলের আগে পর্যন্ত গড়বেতা-কেশপুর সিপিএমের ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল। অবশ্য, পালাবদলের পর পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। নানা মামলায় জড়িয়ে একের পর এক সিপিএম নেতা এলাকা ছাড়তেই প্রভাব বিস্তার করে তৃণমূল। এক সময় সিপিএমের ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত গড়বেতা-কেশপুর থেকে জেলায় ভোট-প্রচার শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমকে কড়া বার্তা দিতে চলেছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একটা সময় এই দুই এলাকায় ঘনঘন অশান্তির ঘটনা ঘটত। সেটা ১৯৯৮-২০০০ সাল। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস গঠনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানে এ জেলা বড় ভূমিকা নিয়েছে বলেও মনে করেন অনেকে। তখন তিনি মাঝেমধ্যেই ছুটে আসতেন এই সব এলাকায়। সিপিএমের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে সুর চড়াতেন।

রাজ্যে পালাবদলের পরও বেশ কয়েকবার জেলা-সফরে এসেছেন তৃণমূলনেত্রী। গিয়েছেন ঝাড়গ্রাম, বেলপাহাড়ি, গোপীবল্লভপুর, মেদিনীপুর, লালগড়। তবে, কেশপুর-গড়বেতায় আসেননি। পাঠিয়েছেন মুকুল রায়-শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতাদের। ফলে, এই দুই এলাকার একাংশ তৃণমূল কর্মীর মধ্যে অসন্তোষও দেখা দেয়। দলের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠে, বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন যিনি ঘনঘন এই সব এলাকায় ছুটে এসেছেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি গড়বেতা-কেশপুরে আসছেন না কেন। এ বার এই দুই এলাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার ফলে একাংশ কর্মীর ওই অসন্তোষ প্রশমিত হবে বলেই মনে করছেন নেতৃত্ব। শুক্রবার জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছিলেন, “দিদি যে গড়বেতা-কেশপুরকে ভুলে যাননি, প্রস্তাবিত কর্মসূচিই তার প্রমাণ।”

বস্তুত, গোড়ায় ঠিক ছিল, আগামী সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরে এসে দু’টি সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী। বেলপাহাড়ি এবং কেশিয়াড়িতে। বেলপাহাড়িতে সভা হবে চিকিৎসক প্রার্থী উমা সরেনের সমর্থনে। কেশিয়াড়িতে সভা হবে অভিনেত্রী প্রার্থী সন্ধ্যা রায়ের সমর্থনে। বৃহস্পতিবারই সূচির কিছুটা হেরফের হয়। রাজ্য নেতৃত্ব জানান, বেলপাহাড়ির বদলে সভা হবে গড়বেতায়। গড়বেতা এলাকা ঝাড়গ্রাম লোকসভার অন্তর্গত। ফলে, গড়বেতায় যে সভা হতে চলেছে, তা চিকিৎসক প্রার্থী উমাদেবীর সমর্থনেই। এই দুই সভার প্রস্তুতি নিয়ে যখন ব্যস্ত জেলা নেতৃত্ব, তখনই কেশপুরের সভার বার্তা আসে। শুক্রবারই এই বার্তা দেন মুকুলবাবু। দলের জেলা নেতৃত্বকে তিনি জানান, কেশিয়াড়ি-গড়বেতার পাশাপাশি আগামী সোমবার কেশপুরেও সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো যেন সব ব্যবস্থা করা হয়। কেশপুরে সভা হবে তৃণমূল প্রার্থী দেবের সমর্থনে। পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনটিই লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে। মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং ঘাটাল। সোমবার জেলায় এসে তিন কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনেই সভা করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, শুরুতে সভা হবে কেশিয়াড়িতে। তারপর গড়বেতায়। গড়বেতার পর সভা হবে কেশপুরে। এ দিন জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছিলেন, “তিন কেন্দ্রে তিনটি সভা হবে। অর্থাৎ, বৃত্তটা সম্পূর্ণ হতেই চলেছে!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement