স্বেচ্ছাসেবক হতে নারাজ ছাত্রকে প্রহার শিক্ষকের

রথের মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে রাজি ছিল না সে। সেই ‘অপরাধে’ এক স্কুলপড়ুয়াকে মারধরের অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। দশম শ্রেণির ওই ছাত্র ক্লাসে প্রথম হয়। ঐতিহ্যের মহিষাদল রথোৎসব ঘিরে এমন অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে মহিষাদলের কুম্ভচক পল্লিশ্রী বিদ্যাভবনের দশম শ্রেণির ছাত্র অরূপ বেরার বাঁ কানের পাশে প্রধান শিক্ষক সন্তুকুমার বেরা সজোরে চড় মারেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রকে মহিষাদল গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০২:৪৫
Share:

রথের মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে রাজি ছিল না সে। সেই ‘অপরাধে’ এক স্কুলপড়ুয়াকে মারধরের অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। দশম শ্রেণির ওই ছাত্র ক্লাসে প্রথম হয়। ঐতিহ্যের মহিষাদল রথোৎসব ঘিরে এমন অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

শনিবার দুপুরে মহিষাদলের কুম্ভচক পল্লিশ্রী বিদ্যাভবনের দশম শ্রেণির ছাত্র অরূপ বেরার বাঁ কানের পাশে প্রধান শিক্ষক সন্তুকুমার বেরা সজোরে চড় মারেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রকে মহিষাদল গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার অরূপকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মহিষাদল থানায় ছেলেকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন অরূপের বাবা চন্দনপ্রসাদ বেরা। সন্তুবাবু অবশ্য বলেন, “অরূপ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মেলায় যাওয়া নিয়ে নানা বিরূপ মন্তব্য করছিল। তা শুনে আমি ওর পিঠে এক ঘা মেরেছি আর বকাবকি করেছি। কানের পাশে চড় মারার অভিযোগ ঠিক নয়।”

মহিষাদলের রথযাত্রা ঘিরে প্রতি বছরই বড় মেলা বসে। পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, রথের মেলায় ভিড় সামলানোর জন্য ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্ররা। রথের মেলা কমিটির সম্পাদক তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী জানান, মেলা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে স্থানীয় কলেজের এনসিসি বিভাগের ছাত্রদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নেওয়া হয়। এ বার আরও স্বেচ্ছাসেবক পাঠানোর জন্য মহিষাদলের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল। তারাই বিভিন্ন স্কুল থেকে স্বেচ্ছাসেবক জোগাড় করেছে।

Advertisement

কুম্ভচক পল্লিশ্রী বিদ্যাভবনের নবম ও দশম শ্রেণি থেকে ২০ জন ছাত্রকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বাছাই করা হয়। শনিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক সন্তুবাবু ওই ছাত্রদের ডেকে জানান, রবিবার তাদের রথের মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যেতে হবে। অরূপ আপত্তি করে। তার অভিযোগ, সন্তুবাবু তখন বরাবর ক্লাসে প্রথম হওয়া অরূপকে মারধর করেন। মেলায় না গেলে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেন। শনিবার সকালে তমলুক জেলা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অরূপ দাবি করে, “প্রধান শিক্ষক কানের কাছে বারবার চড় মারেন। আমার তখন প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হচ্ছিল আর মাথা ঘুরছিল।” অরূপ অসুস্থ হওয়ার পরেও প্রধান শিক্ষক বা অন্য কোনও শিক্ষক তাকে দেখতে আসেননি বলে অভিযোগ।

এই ঘটনার পরে রথের মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে স্কুল পড়ুয়াদের না নেওয়ার কথা ভাবছে মেলা কমিটি। তিলকবাবু বলেন, “স্বেচ্ছাসেবক হতে রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক যেভাবে ওই ছাত্রকে মারধর করেছেন তা ঠিক হয়নি। পরবর্তীকালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে স্কুল ছাত্রদের না নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।” ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ। তিনি বলেন, “অল্পবয়সী ছেলেদের মধ্যে সেবার মনোভাব গড়ে তুলতেই তাদের এ ধরনের কাজে নিয়োগ করা হয়। তবে, এ ক্ষেত্রে কাউকে জোর করা উচিত নয়। আর মারধর করা তো রীতিমতো অন্যায়!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement