ক্রমাগত জনভিত্তি হ্রাস পাচ্ছে। পরিস্থিতি পাল্টাতে দল দাওয়াই দিচ্ছে। তবু কাজের কাজ হচ্ছে না! পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে জেলার বর্ধিত সভা ডেকে জোনওয়াড়ি কাজের মূল্যায়ন করল জেলা সিপিএম।
রবিবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে জেলা সিপিএমের এই বর্ধিত সভায় জোনাল কমিটি এবং জেলা কমিটির সদস্যরাই উপস্থিত ছিলেন। একে একে ৩৩টি জোনাল কমিটির কাজের মূল্যায়ন হয়। জোনাল কমিটিগুলি জানায়, গত তিন মাসে কী কী কর্মসূচি হয়েছে। তা করতে গিয়ে কী কী সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতিই বা এখন কী রকম প্রভৃতি। বর্ধিত সভায় উপস্থিত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “এটা সাংগঠনিক ব্যাপার। সাংগঠনিক কিছু দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে।”
গত বিধানসভা নির্বাচন থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএমের ভরাডুবি চলছে। এ বারের লোকসভা ভোটেও জেলায় বিপর্যস্ত হয়েছে বামেরা। প্রাপ্ত ভোটের হার কমতে কমতে লোকসভায় ২৯ শতাংশে এসে ঠেকেছে। নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, যে সংখ্যক বুথে অবাধ ভোট হয়েছে, সেখানে বামেরা ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সঙ্কট মোকাবিলায় আপাতত, দলের নেতা-কর্মীদের নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছে সিপিএম। দলের বার্তা, এই পরিস্থিতিতে দাঁতে দাঁত দিয়ে লড়তে হবে। মানুষের উপর আস্থা রেখে কাজ করতে হবে।
পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে বুথ ভিত্তিক সংগঠন নাড়াচাড়া করার উপরও জোর দিচ্ছে জেলা সিপিএম। ইতিমধ্যে দলের সর্বস্তরে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, জোন ও লোকাল কমিটি কেন্দ্রকে কর্মচঞ্চল করে তুলতে হবে। গণফ্রন্টগুলোর কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে গেলে স্থানীয় বিষয়গুলিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন কর্মীদের তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মচঞ্চল হওয়ার কথা বলা হলেও সব জোনে যে সমান তৎপরতা নেই, দলের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নেই তা বুঝতে পারছেন জেলা নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্যের কথায়, “এটা ঠিক গত তিন মাসেও সব জোন এলাকায় ঠিক মতো কাজ হয়নি! কিছু বড় জোনাল কমিটি কম কাজ করেছে! তুলনায় ছোট জোনাল কমিটির কাজকর্মের থেকেও পিছিয়ে আছে! এটা অনুচিত!” তাঁর কথায়, “শুধু সন্ত্রাস-সন্ত্রাস বলে দায় এড়ালে হবে না! সন্ত্রাস-অত্যাচারের মধ্যে থেকেও তো বহু কর্মী-সমর্থক মাথা উঁচু করে কাজ করতে চান। তাঁদের কাজ করতে দিতে হবে।” জেলা সিপিএম নেতৃত্ব মনে করেন, গণপ্রতিরোধই পারে সর্বত্র শান্তি-উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে। বর্ধিত সভায় এই বার্তাও দেওয়া হয়। নেতৃত্ব বুঝিয়ে দেন, দৃঢ় অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ করতে পারলেই পার্টি সংগঠনে বিকাশ ঘটবে, না হলে নয়।