ভোটের আগে ফের উত্তপ্ত কেশপুর। রবিবার এনায়েতপুরে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ বাধে। দুপুরে এলাকায় বামেদের মিছিল হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই সংঘর্ষ হওয়ায় বামেরা আর মিছিল করতে পারেনি। তবে স্থানীয় এক কর্মীর বাড়িতে কয়েকজন নেতা মিলে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের বাম প্রার্থী সন্তোষ রাণাও।
বামেদের দাবি, মিছিল ভেস্তে দিতেই এ দিন সকালে দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। তবে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে এক সিপিএম কর্মীকে ধরেছে পুলিশ। ধৃতের নাম শেখ জব্বর আলি। সন্তোষবাবু বলেন, “আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, মার খাচ্ছেন, পুলিশ আমাদের কর্মীদেরই গ্রেফতার করছে।” এনায়েতপুরে গোলমাল হয়েছে, মানছে তৃণমূলও। তবে তাদের দাবি, ঘটনাটি অরাজনৈতিক। কেশপুরের তৃণমূল নেতা চিত্ত গড়াই বলেন, “ওখানে জমি নিয়ে বিবাদ হয়েছে। দলীয় কোনও গোলমাল নয়।”
ইতিমধ্যে কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় রুটমার্চ শুরু করেছে পুলিশ। রাতে তল্লাশি চলছে। তবে, অশান্তিতে ছেদ পড়ছে না। শনিবার কেশপুরের আনন্দপুরের হিঙ্গলবাড়ে তৃণমূল-সিপিএম গোলমাল হয়। অভিযোগ, সিপিএমের লোকজন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। পুলিশ তিন জন সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতারও করে। বামেদের অবশ্য বক্তব্য, তৃণমূলের অভিযোগ মিথ্যে। যাঁদের ধরা হয়েছে, তাঁরা তৃণমূলের সন্ত্রাসে এলাকাছাড়া ছিলেন। আগের দিনই বাড়ি ফেরেন।
রবিবার কেশপুরে বামেদের একাধিক কর্মসূচি ছিল । সেই মতো সকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়। ঠিক ছিল, মাজুরা-মনতায় মিছিলের পর এনায়েতপুরেও মিছিল হবে। প্রথম দু’টি এলাকায় মিছিল হলেও এনায়েতপুরে মিছিল করা যায়নি। সন্তোষবাবুর অভিযোগ, “কর্মসূচি ভেস্তে দিতে তৃণমূলের বাইক-বাহিনী এলাকায় ঢোকে।” মাজুরা-মনতার মিছিলে ছিলেন কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বর দোলুইও। তিনিও সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। মাজুরার মিছিল আসে ঘোষপুর পর্যন্ত।
মনতায় এ দিন সিপিএমের একটি শাখা কার্যালয় খোলা হয়। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে কার্যালয়টি বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, কেশপুরে কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হচ্ছে।
এ দিন বিকেলে মনতায় গোলমাল বাধে। সকালে ওই এলাকায় মিছিল করে বামেরা। বামেদের অভিযোগ, বিকেলে একদল তৃণমূল কর্মী বাইকে করে এসে দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। কেন বামেদের মিছিল হয়েছে, তার কৈফিয়ত তলব করে। সিপিএমের পাঁচ কর্মীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
বাম প্রার্থী তথা সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল বাইরে থেকে লোকজন এনে গ্রাম আক্রমণ করছে। সকালে মিছিল হল। বিকেলে তৃণমূলের লোকজন বাইকে করে এসে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করল। আসলে, আমরা যাতে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি সংগঠিত করতে না- পারি, সে জন্যই তৃণমূল এ ভাবে সন্ত্রাস করছে।” তৃণমূল অবশ্য বামেদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।