সিপিএমের গড়বেতা জোনাল কমিটির সম্পাদকের পদ থেকে সরলেন সুকুর আলি। নতুন সম্পাদক হলেন দিবাকর ভুঁইয়া। আর দলের কেশপুর জোনাল কমিটির সম্পাদকের পদ থেকেও সরলেন আহমেদ আলি। নতুন সম্পাদক হলেন মানিক সেনগুপ্ত। মানিকবাবু দাসের বাঁধ কঙ্কাল মামলায় অভিযুক্ত।
রবিবার এই দুই জোনাল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গড়বেতার সম্মেলন গড়বেতা জোনাল কার্যালয়েই হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। অন্য দিকে, ‘প্রতিকূল’ পরিস্থিতি থাকায় কেশপুরের সম্মেলন মেদিনীপুরে হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তরুণ রায়। দুই জোনাল কমিটিতেই বেশ কিছু ‘নতুন মুখ’ এসেছে। সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, সন্ত্রাস- অত্যাচারের মধ্যে থেকেও যাঁরা মাথা উঁচু করে দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সাহসের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন, নতুন কমিটি নির্বাচনের সময় তাঁদেরই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
গড়বেতা- কেশপুরের মতো একদা ‘লালদুর্গে’ সিপিএমের এখন দুর্দিন। সব এলাকায় পায়ের তলার মাটি ফেরেনি। গত বছর থেকে এই দুই এলাকায় দলের সংগঠন পুনর্গঠনের কাজে উদ্যোগী হয় সিপিএম। লোকাল কমিটির সম্মেলনপর্ব আগেই শেষ হয়। আগে কেশপুরে সিপিএমের সাতটি লোকাল কমিটি ছিল। এ বার সেখানে লোকাল কমিটির সংখ্যা কমিয়ে পাঁচটি করা হয়। এর মধ্যে চারটি কমিটির সম্পাদক পদেই পরিবর্তন আনা হয়। এমনকী দলের কেশপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক করা হয় এক সময়ের দাপুটে নেতা এন্তাজ আলিকে। এন্তাজ সাহেব আগে জোনাল সদস্য ছিলেন। একই পথে গড়বেতাতেও লোকাল কমিটির সংখ্যা কমানো হয়। আগে এখানে সিপিএমের সাতটি লোকাল কমিটি ছিল। সংগঠন পুনর্গঠন করে এ বার সেখানে লোকাল কমিটির সংখ্যা চারটি করা হয়। চারটির সম্পাদক পদেই পরিবর্তন আনা হয়। রবিবার গড়বেতার সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তপন ঘোষ, সুকুর আলিও। দু’জনেই দলের জেলা কমিটির সদস্য। জোনাল কমিটিতেও রয়েছেন। সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপকবাবু দাবি করেন, অদূরেই গড়বেতায় দল ঘুরে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, “মানুষ ভুল বুঝতে শুরু করেছেন। তাই যত আক্রমণই হোক না কেন মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছেন।”
দলের নিয়মানুযায়ী, তিন বারের বেশি কেউই সম্পাদক পদে থাকতে পারবেন না। এই নিয়মেই গড়বেতা- কেশপুরে জোনাল সম্পাদক পরিবর্তন হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। জোনাল সম্পাদকের পদ থেকে সরতে হয়েছে সুকুর আলি, আহমেদ আলিকে। সিপিএমের এক জেলা নেতা বলেন, “আমরা সংগঠনে ঝাঁকুনি দেওয়ার চেষ্টা করছি। কঠিন সময়ে আমরা যুগোপযোগী সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। নিস্ক্রিয় এবং অপ্রয়োজনীয় লোকজনকে বাদ দিয়ে সবস্তরের কমিটির কলেবরই কমিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে। সংগঠনে গতি আনতে তরুণ প্রজন্মের হাতেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আমাদের সংগঠন আগামী দিনে আরও বেশি সক্রিয় ও আন্দোলনমুখী হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের অবশ্য কটাক্ষ, “সিপিএমের পক্ষে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। মানুষই ওদের পাশে নেই। সন্ত্রাসের রাজনীতির সঙ্গে যারা যুক্ত তারাই ওদের নেতা! মানুষ সব দেখছেন।”