রকি খুনে এ বার গ্রেফতার মূল অভিযুক্তের স্ত্রী পুনমও

অরণ্যশহরের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকিকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার অন্যতম ‘চক্রী’ পুনম শর্মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুর কাদুগোন্দানাহাল্লি থানার গোবিন্দপুরা এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে বছর সাতচল্লিশের পুনমকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। রকি খুনের মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মার স্ত্রী পুনমকে গত দু’মাস ধরে হন্যে হয়ে খুঁজছিল ঝাড়গ্রাম পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ০০:০৯
Share:

অরণ্যশহরের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকিকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার অন্যতম ‘চক্রী’ পুনম শর্মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুর কাদুগোন্দানাহাল্লি থানার গোবিন্দপুরা এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে বছর সাতচল্লিশের পুনমকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। রকি খুনের মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মার স্ত্রী পুনমকে গত দু’মাস ধরে হন্যে হয়ে খুঁজছিল ঝাড়গ্রাম পুলিশ। কিন্তু পুনম গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বলে পুলিশের দাবি। মঙ্গলবার পুনমকে বেঙ্গালুরুর একাদশ মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হলে তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর হয়। ওই আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে পুনমকে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করাতে হবে। মঙ্গলবার রাতের ট্রেনেপুনমকে ঝাড়গ্রামে নিয়ে আসা হচ্ছে। এই নিয়ে রকি-হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে হল সাত। এর আগে ঝাড়গ্রাম থেকে পুনমের স্বামী অশোক শর্মা-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, রকি খুনের মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা গ্রেফতার হওয়ার পরে পুনম অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি পুলিশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ঘাটশিলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। কিন্তু পরে পুনম গা ঢাকা দেন। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অপহরণ করার পরে রকিকে অশোকের বাড়িতেই আটক করে রাখা হয়। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে পুনমও ছিলেন। পুলিশের দাবি, গ্রেফতারের পরে পুনম স্বীকার করেছেন সে কথা। এই দু’মাস পুনম কোথায় ছিলেন? পুলিশ সূত্রের খবর, অশোক-পুনমের একমাত্র ছেলে অমিত শর্মা বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। পুনম বেঙ্গালুরুতে ছেলের কাছে চলে যান। কিন্তু এই দু’মাসে মায়ের গ্রেফতারি এড়াতে একাধিক বার ঠিকানা বদল করেন অমিত। ফলে পুনমের নাগাল পায় নি পুলিশ। পুনমের মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। কিন্তু অমিত অন্য একটি ফোন নম্বর ব্যবহার করছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন দেখে অমিতের অবস্থান জানতে পারে পুলিশ। কাদুগোন্দানাহাল্লি থানার সহযোগিতায় সোমবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ ও ঝাড়গ্রাম মহিলা পুলিশের দল গোবিন্দপুরা এলাকায় ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে পুনমকে গ্রেফতার করে।

গত ২৫ এপ্রিল ব্যবসায়িক কাজে মোটর বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান অরণ্যশহরের বলরামডিহির বাসিন্দা বছর পঁচিশের সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি। রকির বাবা পবনকুমার অগ্রবালের ইমারতি সরঞ্জামের বড় ব্যবসা রয়েছে। বাণিজ্যের স্নাতক রকি তাঁর বাবার ব্যবসার সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। পরে ঝাড়গ্রামের সাপধরা এলাকায় নম্বর প্লেট খোলা অবস্থায় রকির বাইকটি পাওয়া যায়। ঝাড়গ্রাম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন রকির বাবা পবনকুমার অগ্রবাল। রকিকে খুঁজে বের করার জন্য পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। ইতিমধ্যে অপহরণকারীরা রকির পরিজনদের মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ বাবদ তিন কোটি দাবি করে। গত ৬ মে ওড়িশার গঞ্জাম জেলার রম্ভা থানার পুলিশ রকির দেহ উদ্ধার করে। অবশেষে পুলিশ জানতে পারে রকিকে অপহরণ করে খুনের মূলপাণ্ডা হলেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ঠিকাদার অশোক শর্মা। গত ৮ মে অশোক ও তাঁর ভাইপো সুমিত শর্মা এবং অশোকের পরিচারক টোটন রাণাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর রকি-খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৮ মে অশোকের দাদা রমেশ শর্মা, রমেশের ছোট ছেলে রোহিত শর্মা ও রমেশের শ্যালক দীনেশ শর্মাকে ধরে পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement