কেশপুরের রণপাড়া এলাকায় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
ভোটারদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর করতে কেশপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করল পুলিশ-প্রশাসনের এক প্রতিনিধি দল। রবিবার কেশপুর এবং আনন্দপুর থানা এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে যায় দলটি। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়। দলে ছিলেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত, কেশপুরের বিডিও মহম্মদ জামিল আখতার, কেশপুর থানার ওসি দয়াময় মাঝি, আনন্দপুর থানার ওসি উত্তম দেবনাথ প্রমুখ।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “ভোটারদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর করতে বিভিন্ন পদক্ষেপই করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্পর্শকাতর এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে নজরদারিও চলছে। ভয়-ভীতি না-থাকলেই মানুষের মনে আস্থা ফিরবে। ভোটাররা নিশ্চিন্তে ভোট দিতে বেরোবেন।” এ দিন কেশপুর এবং আনন্দপুর থানা এলাকার বেশ কয়েকটি বুথও পরিদর্শন করে দলটি।
লোকসভা ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই তেতে উঠছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকা। রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়াচ্ছে অতৃণমূল ও সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা। গত এক মাসে মনতা, মুকুন্দপুর, চরকা প্রভৃতি এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। বামেদের অভিযোগ, পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছে দেখে তৃণমূল একের পর এক এলাকায় হামলা করছে। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মারধর করছে। বামকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, মার খাচ্ছেন, পুলিশ আবার আক্রান্তদেরই মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করছে।
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের দাবি, কিছু পারিবারিক ঘটনার সঙ্গেও বামেরা রাজনীতির রঙ লাগাচ্ছে। কয়েকটি এলাকায় আবার সিপিএমের কয়েকজন নেতা নতুন করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে কেশপুরের বেশ কিছু এলাকায় রুট মার্চ শুরু করেছে পুলিশ। নজরদারির জন্য বিশেষ দলও গড়া হয়েছে। ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’, ‘স্ট্যাটিক সার্ভেল্যান্স টিম’ প্রভৃতি দলগুলো এলাকায় এলাকায় ঘুরছে। দলগুলোতে যেমন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিক থাকছেন, তেমন এসআই বা এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারও থাকছেন। তবে, নজরদারির চললেও অশান্তিতে পুরোপুরি ছেদ পড়েনি। বেশ কিছু এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
এ দিন মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ-প্রশাসনের দলটি মনতা, রণপাড়া, জগন্নাথপুর, মুকুন্দপুর, মাজুরিয়া, চরকা প্রভৃতি এলাকায় যায়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে। তাঁদের কাছ থেকে এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “ভোটের সময় কিছু গোলমাল হয়েই থাকে। কিছু অভিযোগও ওঠে। পুলিশের পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কেশপুরেও কিছু স্পর্শকাতর এলাকা রয়েছে। যেগুলো উত্তেজনাপ্রবণ। এই সব এলাকায় অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে।”