ভুটায় ফের জয়ী বামপন্থীরা, নির্বাচনেই গেল না ওয়েবকুপা

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের (ভুটা) নির্বাচনে ফের জয়ী হলেন বামপন্থী শিক্ষকেরা। তবে, মঙ্গলবারের এই নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, এ দিন তৃণমূল সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার কোনও প্রার্থীই ছিল না! তবে বিনা নির্বাচনে অবশ্য জয় মেলেনি। ১৩টি আসনের মধ্যে বাম-বিরোধীরা মাত্র ৫টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিলেন। তার মধ্যে ৩টি আসনে নির্বাচন হয়। তিনটিতেই অবশ্য জয় পেয়েছে বামপন্থীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৬
Share:

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের (ভুটা) নির্বাচনে ফের জয়ী হলেন বামপন্থী শিক্ষকেরা। তবে, মঙ্গলবারের এই নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, এ দিন তৃণমূল সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার কোনও প্রার্থীই ছিল না! তবে বিনা নির্বাচনে অবশ্য জয় মেলেনি। ১৩টি আসনের মধ্যে বাম-বিরোধীরা মাত্র ৫টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিলেন। তার মধ্যে ৩টি আসনে নির্বাচন হয়। তিনটিতেই অবশ্য জয় পেয়েছে বামপন্থীরা।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচনেও যেখানে তৃণমূল কোমর বেঁধে লড়ছে, তখন দলের শিক্ষক সংগঠন কেন নির্বাচনে লড়াই করল না? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন ওয়েবকুপার বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকা ইন্দ্রানী দত্ত চৌধুরী। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি পদ থেকে ইস্তফা দেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে সাসপেন্ডও করেন। তার ফলেই কী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এত বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সংগঠনও নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে? সদুত্তর এড়িয়ে সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি তুহিনকান্তি দাস বলেন, “ওটা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের ব্যাপার। কেন প্রার্থী দিল না ওঁরাই বলতে পারবেন।”

অবাম শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে ওয়েবকুপা আগে প্রার্থী দিয়েছিল। তাতে ২০১১ সালে একবার জয়ও এসেছিল। যদিও কিছু দিনের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সেই ‘অ্যাসোসিয়েশন’ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। তারপরে প্রতিটি নির্বাচনে ওয়েবকুপা প্রার্থী দিলেও জয় বামপন্থীদেরই হয়েছিল।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ভুটা-য় মোট ১৩ জন সদস্য থাকেন। তার মধ্যে ৫টি পদ অফিস বেয়ারার। বামপন্থী প্যানেলে এ বার সভাপতি হিসাবে সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম, সহ সভাপতি পীযূষ জানা, সাধারণ সম্পাদক দুর্গাশঙ্কর রথ, যুগ্ম সম্পাদক বাসুদেব মণ্ডল ও সুমিতা রায় জয়ী হয়েছেন। এখানে অবশ্য যুগ্ম সম্পাদক বাসুদেব মণ্ডল ও সহ সভাপতি পীযূষ জানা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হয়েছেন। আর রয়েছে এক্সিকিউটিভ কমিটির ৮টি পদ। এখানে অবাম প্যানেলে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বামপন্থীরা ৮টি তেই মনোনয়ন জমা দেন।

তবে, এই নির্বাচন প্রক্রিয়া ভীষণ জটিল। বিশেষত, গণনা। যেহেতু বামপন্থীদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জয় এসে গিয়েছে তাই দু’টি আসনের জন্য আর নির্বাচনে যাননি তাঁরা। দু’জনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। আর সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হন অবাম প্যানেলের সদস্য অরিন্দম গুপ্ত ও আশিস নন্দী।

অরিন্দমবাবুর কথায়, “একটি সংগঠিত প্যানেলের বিরুদ্ধেও লড়াই করা যায় কি না, তা দেখতেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। কিছুটা সাফল্য তো মিলেছে। কারণ, যে আসনগুলিতে নির্বাচন হয়েছিল সেখানে আমাদের প্যানেলের সদস্যরা পরাজিত হলেও, খুব একটা কম ভোট পাননি। ফলে ভবিষ্যতে অবাম হিসাবে লড়াই করায় আরও উৎসাহ পাওয়া গেল।”

নির্বাচনে জয়ী বামপন্থী প্যানেলের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “বামপন্থী প্যানেল একবারই পরাজিত হয়েছিল। ফের আমরাই জয়ী হয়েছি। আমরা চাই দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষার পরিবেশ ছিল, উন্নয়নের ধারা ছিল, তা অটুট থাকুক।” আর বিরোধী প্যানেলে পরাজিত সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব মণ্ডলের কথায়, “আমরা কোনও সংগঠনের তকমা নিয়ে নির্বাচনে যাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষক মিলে একটি প্যানেল জমা দিয়েছিলাম। তাতে আমরা হেরেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement