লোকসভার ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ। সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সর্বত্র ভোটগ্রহণ পর্ব মিটেছে। জেলার বেশ কিছু ভোটরাদের লাইন থাকায় বুথে সন্ধ্যা ৬ টার নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোটগ্রহণ করতে হয়। জেলা প্রশাসনের দাবি, ভোট ঘিরে তেমন কোনও অশান্তির ঘটনা এ দিন ঘটেনি। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (নির্বাচন) অজয় পাল বলেন, “জেলায় শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ হয়েছে। আগামী ১৬ মে সকাল ৮ টা থেকে ভোট গণনা শুরু হবে।”
প্রার্থীদের ভোটভাগ্য এখন বাক্সবন্দি গণনা কেন্দ্রের স্ট্রংরুমে। আগামী শুক্রবার ভোট গণনার জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গোনার পাশাপাশি দলীয়ভাবে চলছে চুলচেরা হিসেব নিকেশও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নির্বাচন দফতরের হিসেব অনুযায়ী, এবার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৮৭.৫৩ শতাংশ। গত ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৯০.৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে গতবারের চেয়ে এ বার প্রায় ৩ শতাংশ কম ভোট পড়েছে। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে।
এ দিকে ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে যন্ত্রে প্রার্থীদের জয় পরাজয়ের হিসেব বন্ধ থাকলেও যুযুধান সব প্রার্থীরাই জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত। তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য জয়ের দাবি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে নারাজ। মঙ্গলবার শুভেন্দুবাবু বলেন, “অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। মানুষ নির্বিঘ্নে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। জয়-পরাজয়ের বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”
ভোটগ্রহণ পর্ব শান্তিপূর্ণ মিটলেও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দলের তমলুক লোকসভা নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের অধিকাংশ বুথ, নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের একাংশ, ময়না ব্লক ও হলদিয়া পুরসভা এলাকার বিভিন্ন বুথ দখল করে তৃণমূলের কর্মীরা ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। এ নিয়ে জেলা নির্বাচন দফতের অভিযোগ জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” তিনি আরও জানান, তমলুক লোকসভা এলাকার মধ্যে ১৪২ টি বুথে পুর্ননির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল অবশ্য বলেন, “বুথে কোনও গোলমালের ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটপর্ব শেষ হয়েছে। কংগ্রেস, সিপিএমের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
পুর্ননির্বাচনের দাবি-সহ সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, “সিপিএম ১৪২ টি বুথে পুর্ননির্বাচনের যে দাবি করেছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন। কারণ সর্বত্র শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ ভোট দিয়েছেন।” অন্য দিকে সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম আলির দাবি, “নন্দীগ্রাম, ময়না ও হলদিয়া পুরসভা এলাকার বেশ কিছু বুথে সন্ত্রাস করে মানুষকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে । তবে লোকসভার বাকি এলাকায় তৃণমূলের হুমকি ও সন্ত্রাস উপেক্ষা যেভাবে মানুষ ভোট দিয়েছেন তাতে আমরা জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।”