লরি লেন ভাঙায় বিপত্তি

বর-কনে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, মৃত তিন

বিয়ের পর গাড়িতে বর ও নববধূ বাড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বরের বাবা-সহ তিনজনের। আহত হয়েছেন বর কৌশিক মণ্ডল-সহ আরও তিন জন। সোমবার সকালে নন্দকুমার থানার বাখরাবাদ গ্রামের কাছে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের নাম কানাই মণ্ডল (৫২), মানসী গিরি ( ৪২ ) ও সন্ধ্যা গায়েন (৫০)। বরের বাবা কানাইবাবুর বাড়ি কলকাতার উল্টোডাঙার শাস্ত্রী কলোনিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০২
Share:

কৌশিকের শোকার্ত পরিজনরা। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

বিয়ের পর গাড়িতে বর ও নববধূ বাড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বরের বাবা-সহ তিনজনের। আহত হয়েছেন বর কৌশিক মণ্ডল-সহ আরও তিন জন। সোমবার সকালে নন্দকুমার থানার বাখরাবাদ গ্রামের কাছে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের নাম কানাই মণ্ডল (৫২), মানসী গিরি ( ৪২ ) ও সন্ধ্যা গায়েন (৫০)। বরের বাবা কানাইবাবুর বাড়ি কলকাতার উল্টোডাঙার শাস্ত্রী কলোনিতে। বরের পিসি সন্ধ্যা গায়েন ঘোলা থানার নাটাগড়ের বাসিন্দা। মানসীদেবী নববধূ মৌমিতার দিদি। দুর্ঘটনায় আহত পাঁচ জনকে উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালেই কানাইবাবু ও সন্ধ্যাদেবীর মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলেই মানসীদেবীর মৃত্যু হয়। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, জাতীয় সড়কে উল্টো দিকের লেন থেকে ডিভাইডারের ফাঁকা এলাকা দিয়ে আচমকা একটি লরি ওই গাড়ির সামনে চলে আসে। সকালে কুয়াশার কারণে সামনের লরিটি দেখতে না পাওয়ায় লরির সঙ্গে গাড়িটির ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনার পর থেকে লরির চালক পলাতক।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৌশিকবাবু লেকটাউন থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করেন। রবিবার কৌশিকের সঙ্গে এগরা থানার দোবান্দি গ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা জানার বিয়ে ছিল। সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ বর, নববধূ-সহ মোট আট জন একটি গাড়িতে করে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। মৌমিতা কলকাতার ফুলবাগান এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স। অন্য একটি বাসে চেপে বরযাত্রী রওনা দেন। এগরা থেকে হাওড়া আসার পথে হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়ক ধরেই তাঁরা ফিরছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বাখরাবাদের কাছে আচমকা নিয়ম ভেঙে উল্টোদিকের লেন থেকে একটি লরি সামনে চলে আসায় গাড়িটির সঙ্গে লরির ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই মানসীদেবীর মৃত্যু হয়। আহত হন বর-সহ আরও পাঁচ জন। তাঁদের তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কানাইবাবু ও সন্ধ্যাদেবীরও মৃত্যু হয়। সন্ধ্যাদেবীর স্বামী মন্টু গায়েনও গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। বাকি আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার তমলুক জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ওই দুর্ঘটনায় বাবা ও পিসিকে হারিয়ে বিধ্বস্ত কৌশিকবাবু। তাঁর পাশেই বসে মৃতা মানসীদেবীর দশ বছরের ছেলে সুদীপ গিরি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নববধূ মৌমিতাও। তিনি বলেন, “গতকাল রাতে আমাদের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সকাল ৮ টা নাগাদ আমরা গাড়িতে রওনা দিই। আমাদের গাড়ি সড়কের বামদিকের লেন ধরে আসছিল। কিন্তু আচমকা উল্টোদিকের লেন থেকে একটি লরি আমাদের লেনে ঢুকে পড়ে। এরফলে আমাদের গাড়ির সঙ্গে লরির ধাক্কা লাগে। ওই লরির জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটল।” কৌশিকও বলেন, “আমাদের গাড়ি ঠিকভাবেই যাচ্ছিল। কিন্তু এ ভাবে যে আমাদের লেনে লরি ঢুকে দুর্ঘটনা ঘটবে, তা ভাবতে পারিনি।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement