উদ্বোধনের পর হর্ষ নেওটিয়া।
রাজ্যে পঞ্চম, তবে হলদিয়ায় এটাই প্রথম। কলকাতার সিটি সেন্টারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বুধবার হলদিয়ায় পঞ্চম সিটি সেন্টারের উদ্বোধন করলেন অম্বুজা-নেওটিয়া গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হর্ষ নেওটিয়া। ৫ একর ৩৭ ডেসিমল জায়গার উপর প্রযুক্তিবিদ বিবেক সিং রাঠোরের ডিজাইনে ১১০ কোটি টাকা গড়ে উঠেছে এই প্রকল্প। উদ্বোধনের পর হর্ষের কথায়, “শুধু কিনতে নয়, এখনে ঘুরতে আসুন পরিবার নিয়ে।”
৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সিটি সেন্টার স্টপেজে নেমে হলদিয়া পুরসভার দিকে পাঁচ মিনিটের হাঁটলেই শহরের এই নতুন মল। এই সিটি সেন্টারের পাশেই হলদিয়া পুরসভা, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের অফিস, একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হলদিয়ার বাসিন্দারা এই মল থেকে কী কী পাবেন? জানা গিয়েছে, মলে থাকছে তিনটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সিনেমা হল। থাকছে একাধিক নামীদামি ব্রান্ডের শো-রুম। থাকছে পিৎজার বড় খাদ্য বিপণি।
শিল্প শহর হলদিয়ায় রয়েছেন বহু ভিন রাজ্যের মানুষ। তামাম শিল্পাঞ্চলে বিনোদনের জায়গার অভাব ছিল। ভাল সিনেমাহলের অভাব বরাবারই অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। প্রিয়া এন্টারটেনমেণ্ট এর কর্ণধার অরিজিৎ দত্তর হাত ধরে এ দিন বায়োস্কোপের পথ চলা শুরু হল। প্রথম দিন টিম ‘বুনো হাঁসে’র উপস্থিতিতে প্রিমিয়ার শো হল। হর্ষ নেওটিয়াও কিছুক্ষণ বসে দেখলেন সিনেমা। অরিজিৎ জানিয়েছেন, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ‘টিম বচ্চন’ নিয়ে আসছেন জিৎ। আসার কথা রয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরও। এ দিন ‘ক্যাকটাস’-এর অনুষ্ঠান দেখার জন্য তরুণ-তরুণীদের ভিড় ছিল দেখার মতো।
সুমন মণ্ডল, তন্ময় বেরার মত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্ররা এই মলের উদ্বোধনে খুব খুশি। তাঁদের কথায়, “আড্ডা দেওয়ার একটা ভাল জায়গা হল। ঘুরব, সিনেমা দেখব, খাব।” আবার মলের চলমান সিঁড়িতে উঠতে পারা নিয়ে ধন্দে ছিলেন গ্রামের মালতি, জাফররা। তবে একবার ওঠানামা করতে পেরে অতি উৎসাহে আরও বেশ কয়েকবার একা একাই ওঠানামা করলেন তাঁরা। প্রবীণ এক ব্যক্তি তো বলেই ফেললেন, “কলকাতায় এমন মলের কথা শুনেছি। টিভিতে দেখেওছি। কিন্তু আমার শহরে এমন একটা জিনিস যে কোনও দিন হবে, ভাবিনি। ভাল লাগছে।”
পুজোর আগে এমনতর উপহারে খুশি হলদিয়া। এক সময় জেলেদের গ্রাম হলদিয়াতে শহুরে বাতাস লাগল বলে মনে করছেন অনেকই। কেনাকাটা করে বেজায় খুশি কোয়েল, দীপান্বিতা, নুর আলমরা। জনতার এমন আগ্রহে খুশি হর্ষও। অদূর ভবিষ্যতে কি আরও কিছু বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে? স্মিত হেসে তাঁর জবাব, “আমাদের কাছে জমি রয়েছে। এই মল সফল ভাবে চলুক। তারপর আমরা সেই জায়গা কাজে লাগাবো।”