বিজেপি বাড়ছে, কবুল আরএসপি-র

জেলা সম্মেলনে আগেই বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধির কথা মেনেছিল সিপিএম, সিপিআই। এ বার একই ভাবে ওই কথা কবুল করল বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক আরএসপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০০:২২
Share:

জেলা সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ক্ষিতি গোস্বামী। —নিজস্ব চিত্র।

জেলা সম্মেলনে আগেই বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধির কথা মেনেছিল সিপিএম, সিপিআই। এ বার একই ভাবে ওই কথা কবুল করল বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক আরএসপি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে আরএসপি-র জেলা সম্মেলন হয়। জেলা সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেই পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধির কথা মানা হয়েছে। কেমন? প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিজেপি দলটি সব থানাতে সংগঠন বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে। তৃণমূল দলের কার্যকলাপে বীতশ্রদ্ধ হয়ে, বামফ্রন্টকে ভরসা না করে সব সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ এই সদ্য কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় আসা দলটিকে খানিকটা ভরসা করছে। এই ভাবে দলটির জনসমর্থন উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

এ দিন মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে আরএসপির জেলা সম্মেলন হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী, জেলা সম্পাদক শক্তি ভট্টাচার্য প্রমুখ। বামফ্রন্টের শরিক দলের এই স্বীকারোক্তি নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছি, বিজেপি এগোচ্ছে। বহু মানুষ দলে আসছেন। আসতে চাইছেন। মানুষ ধরেই নিয়েছেন এ রাজ্যে বিজেপিই প্রধান বিরোধী শক্তি।”

Advertisement

গত মাসেই মেদিনীপুরে সিপিএম, সিপিআই এই দুই দলের জেলা সম্মেলন হয়। দুই দলের জেলা সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে গেরুয়া শিবিরের শক্তিবৃদ্ধির কথা মানা হয়। সিপিএমের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘গত বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির জনসমর্থন কমলেও গত লোকসভা নির্বাচনে জেলায় ভোট বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে এই দল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে এই দল নিজেদের অনুকূলে আনার চেষ্টা করছে। বর্তমানে সমস্ত ব্লক ও পুর এলাকায় এই দল সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। শহর ও গঞ্জ এলাকায় এদের গণসমর্থন বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য।’ এ বার আরএসপির পর্যবেক্ষণও প্রায় একই। বামফ্রন্টের এই শরিক দলের মতে, তৃণমূল দলের কার্যকলাপে বীতশ্রদ্ধ হয়ে, বামফ্রন্টকে ভরসা না করে সব সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ এই সদ্য কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় আসা দলটিকে খানিকটা ভরসা করছে। জেলা সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে তৃণমূলেরও কড়া সমালোচনা করেছে আরএসপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সরকারের আমলে প্রতিশ্রুতির জোয়ার যতটা ততটা উন্নয়ন হয়নি। বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে অসংগঠিত শ্রমিক। শিক্ষিত যুবকরাও অসংগঠিত শ্রমিকের লাইনে ভিড় বাড়াচ্ছে। বহু বেকারকে দেখা যাচ্ছে অন্য রাজ্যে সোনা-রূপা-জরির কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ নিয়ে পরিবারের সুরাহা করতে চেষ্টা করছে। শিল্পায়নের উদ্যোগ কিছু নেই। বরং বাম আমলে শিল্প গঠনের প্রস্তাব বা ব্যবস্থাপনাগুলো ধ্বংসের মুখে।”

এ দিনই সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রী-র স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর সময় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হলেন আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী। বৃহস্পতিবার দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনে এসে ক্ষিতিবাবু বলেন, “এই সম্পর্কে তদন্ত করার যথেষ্ট সময় পাওয়া গিয়েছিল। মনে হচ্ছে এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল।” তাঁর কটাক্ষ, “এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ কাজ। মানুষ সব বুঝতে পারছেন।” এ দিন সূর্যবাবুর প্রশংসাও করেছেন আরএসপির রাজ্য সম্পাদক। জানিয়েছেন, সূর্যকান্ত মিশ্র রাজ্য সিপিএমের নেতৃত্ব এলে বামফ্রন্টেরও ভাল হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement