প্রধানের সামনেই ঠেকে ভাঙচুর, আগুন নন্দকুমারে

পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের উপস্থিতিতে চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হল নন্দকুমারের রাজনগর গ্রাম লাগোয়া বাজারে। এই রাজনগর গ্রামে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পরে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার পিটিয়ে মারা হয়েছে এক প্রৌঢ়কে। রতন দাস নামে ওই প্রৌঢ়কে ওই চোলাইয়ের ঠেকে দেখা যেত বলে দাবি এলাকাবাসীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দকুমার শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০২:০৭
Share:

রাজনগর গ্রামে মৃতা স্কুলছাত্রীর বাড়িতে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। পার্থপ্রতিম দাস।

পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের উপস্থিতিতে চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হল নন্দকুমারের রাজনগর গ্রাম লাগোয়া বাজারে। এই রাজনগর গ্রামে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পরে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার পিটিয়ে মারা হয়েছে এক প্রৌঢ়কে। রতন দাস নামে ওই প্রৌঢ়কে ওই চোলাইয়ের ঠেকে দেখা যেত বলে দাবি এলাকাবাসীর। এ দিন গ্রামে পুলিশ-পিকেট থাকলেও চোলাই ঠেকে হামলার সময় পুলিশকে ডাকেননি গ্রামবাসীরা। হামলার পরে সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মানস হাজরার দাবি, “ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ঠেক ভেঙেছেন। আমি ওঁদের পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছি।”

Advertisement

কালীরহাট বাজার থেকে রাজনগর গ্রামে যাওয়ার আধ কিলোমিটার পথে বাঁশের বেড়া আর হোগলা-ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া সার-সার ঘরে বসে চোলাইয়ের ঠেক। বৃহস্পতিবার সকালে যে নিমগাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় রাজনগরের নাবালিকার দেহ মিলেছিল, ঠেকগুলির দূরত্ব সেখান থেকে দু’শো মিটার। মেয়েটিকে ধর্ষণ ও খুনে জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবারই হামলা হয় মেয়েটির প্রতিবেশী রতন ও তাঁর দুই সঙ্গী ভীম সিংহ ও ভজহরি দাসের উপরে। গণপ্রহারে মারা যান রতন। বাকি দু’জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি। কিছুটা সুস্থ হলে তাদের জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তবে এলাকাবাসীর অনেকেই এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন পুলিশের উপরে তাঁদের বিশেষ আস্থা নেই। পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি সুকেশকুমার জৈনের দাবি, আবগারি দফতর ও পুলিশ বেআইনি মদের ঠেক ভাঙতে নিয়মিত অভিযান চালায়, ধরপাকড়ও করে। রাজনগরের একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, “পুলিশ ও শাসক দলের নেতাদের যোগসাজসেই রমরম করে চলে চোলাইয়ের ঠেকগুলো।” চোলাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দলের কারও জড়িত থাকার অভিযোগ মানেননি পঞ্চায়েত প্রধান মানসবাবু। তাঁর দাবি, “এর আগে আমরা দলের তরফ থেকে অভিযান চালিয়ে চোলাইয়ের ঠেক তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরে যে এত ঠেক গজিয়ে উঠেছে, জানা ছিল না।” এলাকাবাসীর বক্তব্য, কালীরহাট বাজারে হামেশাই দেখা যায় প্রধানকে। ঠেকগুলি তাঁর চোখে না পড়ার অন্য কারণ থাকতে পারে।

Advertisement

এ দিন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী গ্রামে গেলে ক্ষোভ চেপে রাখেননি রাজনগরবাসী। সাংসদের সঙ্গে জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, নন্দকুমারের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরাও ছিলেন। তাঁদের সামনেই গ্রামের মহিলারা চোলাইয়ের ঠেক নিয়ে সাংসদের কাছে নালিশ জানান। শুভেন্দু তাঁদের বলেন, “পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি আপনারাও এগিয়ে আসুন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement