পটাশপুরের মঙ্গলপুরে শিশির অধিকারীর কর্মিসভা। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
আগামী বিধানসভা ভোটের আগে মহিষাদলকে পুরসভা করার প্রতিশ্রুতি দিলেন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সন্ধ্যায় মহিষাদলের রথতলা ময়দানে ভোটের প্রচারে প্রথম জনসভা করলেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শুভেন্দুবাবু। তাঁর কথায়, “মহিষাদল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পবিত্র ভূমি। তাই এখান থেকেই ভোটের প্রচার শুরু করলাম।” তিনি বলেন, “২০১৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মহিষাদলে কোনও মোরাম রাস্তা থাকবে না। মহিষাদলকে পুরসভা করা হবে। মহিষাদলের রাজবাড়ির চিহ্নিত জমিতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ যে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, জমি হস্তান্তর হলেই তার কাজ শুরু হবে। আমরা কেন্দ্র সরকারে ক্ষমতায় এলে একশো দিনের কাজ দু’শো দিনের করা হবে।” শুভেন্দুবাবু বলেন, “কিছু কাজ করেছি, সব করতে পারিনি। আমাকে আবার কাজের সুযোগ দিন।” সিপিএমকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “সিপিএম সংখ্যালঘু প্রার্থী দাঁড় করিয়ে ধর্মের জিগির তুলে ভোট চাইছে। আমার অনুরোধ, আপনারা বিজেপির মতো ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করবেন না।”
লক্ষ্মণ শেঠ প্রসঙ্গে সিপিএমের অর্ন্তদ্বন্দ্বকে কটাক্ষ করে শুভেন্দুবাবু বলেন, “বিমান বসু, গৌতম দেব, রবীন দেবরা একসঙ্গে কাপড় কাচার প্রতিযোগিতা চালাচ্ছেন। এতে তাঁদের গায়ের ময়লাই বেরিয়ে আসছে।” লক্ষ্মণ শেঠকে বহিষ্কার করে সিপিএম শুদ্ধিকরণ করেছে, সিপিএমের এই দাবিকে ব্যঙ্গ করে শুভেন্দুবাবু বলেন, “২০০৮ সাল থেকে মানুষ ওঁদের শুদ্ধিকরণ করে দিচ্ছেন। এই জেলায় সিপিএমকে শেষ করতে হবে। নন্দীগ্রামে গণহত্যা সংগঠিত করেছিল সিপিএম ও বাম সরকার। লক্ষ্মণ শেঠ বা একজন কেউ নয়। তাঁদের সকলেরই শাস্তি চাই।” এ দিন গতবারের থেকেও তাঁকে বেশি ভোট দেওয়ার আবেদন জানান শুভেন্দুবাবু। তিনি জানান, নন্দীগ্রাম কাণ্ডে রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় মানুষদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি করেছিলেন, তার মধ্যে ১০৭টি মামলা ইতিমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মোট ৩০২টি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে, পটাশপুর ২ ব্লকের শ্রীরামপুর অঞ্চলের মঙ্গলপুরে কর্মিসভা করেন কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শিশির অধিকারী। শিশিরবাবু বলেন, “আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় আর কোনও মোরাম রাস্তা থাকবে না। কর্মসংস্থানের উপযুক্ত পরিবেশও তৈরি করা হবে।” কর্মিসভায় শিশিরবাবু কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম প্রার্থীকে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করেন। লক্ষ্মণ শেঠ প্রসঙ্গে শিশিরবাবু বলেন, “লক্ষ্মণ শেঠ বর্তমানে অরাজনৈতিক লোক। তাছাড়া তাঁর ঝুলিতে যা আছে, তা বের হলে সিপিএম মুছে যাবে।” এরপর পটাশপুরের খাড় এলাকায় শিশিরবাবু আরও একটি কর্মিসভা করেন। ওই কর্মিসভায় পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর দাবি করেন, “সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত লক্ষ্মণ শেঠ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের কাছে একটি ডায়েরি পাঠিয়েছেন। ওই ডায়েরিতে পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএমের হার্মাদদের তালিকা রয়েছে।”