তমলুকে প্রশাসনিক ভবনে বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক।
জেলা নির্বাচন দফতরের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে প্রাক-নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন রাজ্যের বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ। তার আগে প্রশাসনের উদ্যোগে সর্বদল বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পরেও বাম-কংগ্রেস-বিজেপি আলাদা ভাবে নিজেদের দাবি-দাওয়া জানান বিশেষ পর্যবেক্ষককে।
শুক্রবার পূর্বের জেলা প্রশাসনিক ভবন তমলুকে দুপুর ২টোয় সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু, বিশেষ পর্যবেক্ষক পৌঁছন বিকেল চারটের সময়। তারপর শুরু হয় বৈঠক। ওই বৈঠক চলে এক ঘণ্টারও বেশি সময়। তারপরে আলাদা ভাবে তিনি জেলা নির্বাচন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক করেন।
সর্বদল বৈঠকের পরে সিপিএমের নেতৃত্ব বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের সঙ্গে আলাদা করে দেখা করার আর্জি জানান। একই দাবি জানায় কংগ্রেসও। কেন? সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্মল জানা বলেন, “আমাদের কতগুলি অভিযোগ নির্দিষ্ট ভাবে তুলে ধরার জন্যই বিশেষ পর্যবেক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। পরে আলাদা ভাবে দেখাও করেছি।” কী জানালেন বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষকে? নির্মলবাবু বলেন, “নন্দীগ্রাম খেজুরি-সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের লোকেরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে। প্রচারে যাওয়া নেতাকর্মীদের উপরে হামলা হচ্ছে। সমস্ত বিষয়টি বিস্তারিত জানানো হয়েছে।” নন্দীগ্রাম-খেজুরির ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর আর্জিও জানান সিপিএম নেতৃত্ব। বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক এ ব্যাপারে তাঁদের আশ্বস্থ করেছেন বলে নেতৃত্বের দাবি। সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান বলেন, “গত ৩০ এপ্রিল হওয়া তৃতীয় দফার নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকায় আমরা হতাশ। কিন্তু এই মুহুর্তে কমিশনের উপরে ভরসা রাখা ছাড়া উপায় নেই!” কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক মৃণাল পাল বলেন, “নন্দীগ্রাম-সহ বেশ কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ ব্যবস্থার আর্জি জানিয়েছি।” বিজেপির জেলা নেতৃত্বের তরফেও এ দিন লিখিত ভাবে হলদিয়ায় দলীয় প্রার্থীদের উপরে হামলা, খেজুরিতে প্রচার সভায় হামলা-সহ বিভিন্ন ঘটনায় শাসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
বৈঠকের পরে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে নানা অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলি খতিয়ে দেখে কমিশনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শুধু নন্দীগ্রাম-খেজুরি নয়, বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
শাসকদলের বিরুদ্ধে উঠা সন্ত্রাসের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “সিপিএমের অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলায় কোথাও কোনও সন্ত্রাস নেই। যে টুকু হচ্ছে সেটাও সিপিএমের লক্ষ্মণ অনুগামীদের সঙ্গে দলের অফিসিয়াল গোষ্ঠীর গোলামালের জেরেই হচ্ছে।” প্রশাসনের ডাকা সর্বদল বৈঠকে তমলুক ও কাঁথি দুই লোকসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।