দেড় বছরেও পড়েনি পিচ, ক্ষোভ কেশপুরে

দেড় বছরেও হয়নি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির কাজ। বৃষ্টিতে খন্দপথে সমস্যায় কেশপুরের ৫০টি গ্রামের বাসিন্দারা। কেশপুর ব্লকের গাঙতা থেকে মহিষদা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজের অনুমোদন মিলেছিল প্রায় বছর দেড়েক আগে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ওই রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা ছিল। দেড় বছরে কাজ হয়েছে বলতে কিছু কিছু জায়গায় মাটি দিয়ে ভরাট করা। কোথাও বা মোরাম পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২২
Share:

বেহাল কেশপুরের গাঙতা-মহিষদা রাস্তা। সলঙ্গার কাছে তোলা ছবি। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

দেড় বছরেও হয়নি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির কাজ। বৃষ্টিতে খন্দপথে সমস্যায় কেশপুরের ৫০টি গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

কেশপুর ব্লকের গাঙতা থেকে মহিষদা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজের অনুমোদন মিলেছিল প্রায় বছর দেড়েক আগে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ওই রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা ছিল। দেড় বছরে কাজ হয়েছে বলতে কিছু কিছু জায়গায় মাটি দিয়ে ভরাট করা। কোথাও বা মোরাম পড়েছে। কিন্তু বৃষ্টিতে রাস্তার এমনই খন্দ দশা যে পথ চলা যায় না। ঝুঁকি নিয়ে সে পথেই সাইকেলে, মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতে হয় মানুষকে। কেন কাজ হয়নি? ধলহরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ জসিমুদ্দিন বলেন, “বহুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তাটি তৈরি করার জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছিল। কিন্তু কেন তা তৈরি হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না। রাস্তা তৈরি না হওয়ায় এলাকার মানুষের যে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে তাও ঠিক। সব জেনেও ঠিকাদার কেন উদাসীন বুঝতে পারছি না।” রাস্তার বরাত পাওয়া ঠিকাদার রাম পাল বলেন, “রাস্তার কিছুটা অংশে বন দফতরের জমি ছিল। কিছু ক্ষেত্রে বসতি পড়েছিল। তা এড়িয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করতে গিয়েই দেরি হয়েছে। তবে এবার দ্রুত পিচের কাজও শুরু হয়ে যাবে।”

গাঙতা, নারায়ণচক, সলঙ্গা-সহ বহু গ্রামের মানুষ এই পথ দিয়েই কেশপুরে যাতায়াত করেন। এলাকাটি মূলত কৃষি প্রধান। ফলে চাষের ফসল বিক্রি করতেও এই পথ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। পথের পাশে রয়েছে স্কুল, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, পঞ্চায়েত অফিসও। যেহেতু ওই এলাকার একমাত্র বাজার কেশপুর, তাই এলাকার মানুষকে সব্জি বাজার থেকে শুরু করে যাবতীয় কেনাকাটার জন্য কেশপুরের উপরেই নির্ভর করতে হয়। যেহেতু ওই রাস্তার দু’পাশে বহু গ্রাম রয়েছে, তাই যাতায়াতের সুবিধের জন্য ওই রাস্তায় দু’টি বাস চালানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাস্তা খারাপের জন্য বাসগুলি প্রায়ই বন্ধ হয়ে যায়। খন্দপথে চলাচলকারী বাসে যে কোনও সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় জল জমে যায়। ফলে জল জমে রাস্তার গর্তগুলি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃষ্টি হলে বাস বন্ধ হয়ে যায়। কখনও কখনও একটানা ৫-৭ দিনও বাস বন্ধ থাকে। সাইকেল, মোটর সাইকেল প্রায় সকলের বাড়িতেই রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে মেয়েদের কোনও কাজের জন্য বাইরে যেতে হলে বা আত্মীয়স্বজনেরা গ্রামে এলে সহজেই বাসে যাতায়াত করতে পারতেন। আবার বৃষ্টি হলে সাইকেল, মোটর সাইকেলে যাতায়াত করাও কঠিন হয়। স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল রায় বলেন, “বৃষ্টির সময়েই তো বেশি অসুবিধে হয়। সে সময় বাসে যেতে পারলে আমাদের বেশি উপকার হয়। কিন্তু রাস্তা খারাপের জন্য সেই সময়েই বাস চলে না। ফলে চুড়ান্ত দুর্ভোগে পড়তে হয়।” এই দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যাতে সহজেই একদিকে মানুষ পঞ্চমীর কাছে রাজ্য সড়কে উঠতে পারেন। সেদিক দিয়ে কেশপুর বা মেদিনীপুর যেতে পারেন। আবার উল্টোদিকে মহিষদা হয়ে ঘাটাল বা কেশপুর যেতে পারেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির কাজও দেড় বছরে শুরুই হল না। যদিও এবার দ্রুত গতিতে পিচ করার কথা জানিয়েছে ঠিকাদারি সংস্থাটি।

এখন দেখার, কত দ্রুত ওই রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement