জেলা সিপিএম সম্পাদক দীপক সরকারের উপস্থিতিতে হওয়া অভ্যন্তরীণ সাধারণসভায় আশানুরূপ সংখ্যক কর্মীদের হাজির করতে পারল না সিপিএম। বৃহস্পতিবার পিংলা ব্লকের কর্মীদের নিয়ে সাধারনসভা ডেকেছিল সিপিএম। সভা হয় ডেবরা ব্লকের বালিচকে। সেখানে লোকসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির মূল্যায়নের ব্যাখ্যা করেন দীপকবাবু। হাজির ছিলেন জোনাল কমিটির সম্পাদক নয়ন দত্ত, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুভাষ দে প্রমুখ। তবে পিংলার প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মীই সভায় উপস্থিত ছিলেন না বলে সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই পিংলা ব্লকে রীতিমতো কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে সিপিএম। বহু কর্মী-সমর্থক দলত্যাগ করায় সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়েছে দল। নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেও লোকসভা ভোটে সাফল্য পায়নি সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে শঙ্কিত কর্মীরা যাতে নির্ভয়ে ব্লকের বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারে, সে জন্য অন্য ব্লকেও সেই কর্মসূচির আয়োজন করছে পিংলার সিপিএম নেতৃত্ব। সেই অনুযায়ী এ দিন পাশের ডেবরা ব্লকে সাধারণসভার আয়োজন করা হয়েছিল।
কিন্তু অধিকাংশ কর্মীই অনুপস্থিত কেন? সিপিএমের পিংলা জোনাল সম্পাদক নয়ন দত্ত বলেন, “আমাদের দলের মূল্যায়ন দেখলে বোঝা যাবে বিপর্যয় হয়নি। কিন্তু কর্মীদের মনে হয়তো এই বিপর্যয়ের প্রচার হতাশা ও অনীহা এনে দিয়েছে। তাই ব্লকের অর্ধেকের বেশি কর্মী আসবেন বলে আশা করলেও অর্ধেকের কম কর্মী এসেছেন।” তবে এই পরিস্থিতি দ্রুত কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে তাঁর আশা। সিপিএমের নিচুতলার কর্মী অবশ্য মানছেন, “আমাদের এলাকায় জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি (অন্তরা ভট্টাচার্য)-সহ একটা বড় অংশ দল বেরিয়ে গিয়েছেন। তৃণমূলের অত্যাচারে অনেক সময় দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে পাশে না পাওয়ায় ক্ষোভ জন্মাচ্ছে। এতে আরও ভেঙে পড়ছেন কর্মীরা। এগুলিই অনুপস্থিতির কারণ।”
সিপিএমের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দলের ওই সাধারণসভায় লোকসভা নির্বাচনের পর্যালোচনায় অবশ্য দলের ফল আশানুরূপ না হলেও বিপর্যয় হয়নি বলেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। এ ভাবেই উপস্থিত কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। এলাকায় তৃণমূলের পাশাপাশি অন্যদল মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করলে তার মোকাবিলা কী ভাবে সেই পরামর্শও দেওয়া হয়েছে এ দিনের সভায়। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে ঘুরে দাঁড়ানো যে কঠিন হবে না সেই বার্তাও দেওয়া হয়।