দুই মেদিনীপুরে বাড়ল পরীক্ষাকেন্দ্র

পড়ুয়াদের হয়রানি এড়াতে স্কুলের দুই-তিন কিলোমিটারের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। আর তার ফলস্বরূপ চলতি বছর দুই মেদিনীপুর জেলাতেই বাড়ানো হল পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র সংখ্যা। আজ, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ২৮ মার্চ পর্যন্ত। এ দিন থেকেই শুরু হচ্ছে একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষাও। চলবে ২৯ মার্চ পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০০:৫৮
Share:

পড়ুয়াদের হয়রানি এড়াতে স্কুলের দুই-তিন কিলোমিটারের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। আর তার ফলস্বরূপ চলতি বছর দুই মেদিনীপুর জেলাতেই বাড়ানো হল পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র সংখ্যা।

Advertisement

আজ, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ২৮ মার্চ পর্যন্ত। এ দিন থেকেই শুরু হচ্ছে একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষাও। চলবে ২৯ মার্চ পর্যন্ত। গত বছর পূর্ব মেদিনীপুরে মূল পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪৫টি, এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৪৭টি। অন্য দিকে, গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে মূল পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৫০টি, এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৫২টি। মাধ্যমিকের মতো এ বার উচ্চমাধ্যমিকেও ‘স্পর্শকাতর’ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত থাকবে। প্রয়োজনে গোপন ক্যামেরায় ভিডিওগ্রাফি করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মেদিনীপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধিকর্তা সৌভিক ঘোড়ই বলেন, “সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা-পর্ব সম্পন্ন করতে সব রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগের থেকে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর ফলে পরীক্ষার্থীদের সুবিধা হবে।”

পূর্ব মেদিনীপুরে এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজার ১৯৮। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ১৭১, ছাত্রী ২০ হাজার ২৭। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ২৯৬। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৯ হাজার ৩৯৫। এর মধ্যে ছাত্র ২৬ হাজার ৫৮৪। ছাত্রী ২২ হাজার ৮১১। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ১৮৯। সব মিলিয়ে এ বছর দুই মেদিনীপুরে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ৪৩১। পূর্বে মোট পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৬টি। এর মধ্যে ৪৭টি মূল কেন্দ্র। এই সব কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন ৩৫৭টি স্কুলের ছাত্রছাত্রী। পশ্চিমে মোট পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৯৪টি। এর মধ্যে ৫২টি মূল কেন্দ্র। মাধ্যমিকের পর জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা উচ্চ মাধ্যমিক। স্বাভাবিক ভাবে পরীক্ষার সময় কিছুটা টেনশন থাকেই। উদ্বেগে থাকেন অভিভাবকরাও। এই পরিস্থিতিতে দূরে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই এ বার দুই মেদিনীপুরে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে সংসদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

Advertisement

পরীক্ষা-পর্ব সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে দুই জেলাতেই প্রস্তুতি-বৈঠক হয়েছে। যেখানে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে যাতে পানীয় জল, পানীয় জল, শৌচাগার প্রভৃতির সুষ্ঠ ব্যবস্থা থাকে, সময় মতো পুলিশ মোতায়েন থাকে, এ সব নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি পরীক্ষার ব্যবস্থার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁদের কাছে সংসদের আবেদন, যত ক্ষুদ্র তাঁদের ভূমিকা হোক তা যেন তাঁরা যথাসম্ভব গুরুত্ব সহকারে পালন করেন। সৌভিকবাবু বলেন, “পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনও রকম সমস্যার মধ্যে না-পড়ে, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাস পরিবহণকে পুরোপুরি স্বাভাবিক রাখতে বলা হয়েছে।”

পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ নতুন নয়। কিছু ক্ষেত্রে বাইরে থেকেও নকল সরবরাহ করা হয়। এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতি এড়াতে এ বার তৎপর হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদ কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বার অতিরিক্ত প্রহরা, অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী থাকবে। গত বছর যে সব কেন্দ্রে সামান্য উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিল, সেই সব কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত থাকবে। পুলিশের কাছে ‘স্পর্শকাতর’ কেন্দ্রের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। সংসদের মেদিনীপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধিকর্তা সৌভিক ঘোড়ই বলেন, “বিশেষ নজরদারির জন্য দুই মেদিনীপুরেই কিছু কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। ঠিক কোন কোন কেন্দ্রে এই ব্যবস্থা থাকবে, তা বলা যাবে না।”

অন্য দিকে, প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক ঘন্টা অতিরিক্ত সময় থাকছে। সংসদ সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে ৯ জন প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ১৯ জন অন্ধ ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১২ জন প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ১৩ জন অন্ধ ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। এঁদের অনেকেই রাইটার নিয়ে পরীক্ষা দিতে চেয়ে সংসদের কাছে আবেদন করেছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে সেই সব আবেদন মঞ্জুরও করেছে সংসদ। সংসদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যারা রাইটারের আবেদন করেছিল, তাদের আবেদনগুলো খতিয়ে দেখা হয়েছে। আবেদন মতো রাইটারের ব্যবস্থা করাও হয়েছে।

আজ, বুধবার থেকেই শুরু হচ্ছে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও। পূর্ব মেদিনীপুরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজার ৬২২। এর মধ্যে ছাত্র ১৯ হাজার ৭৫১, ছাত্রী ২০ হাজার ৮৭১। পশ্চিম মেদিনীপুরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ হাজার ২৭৬। এরমধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৭০৬, ছাত্রী ২৪ হাজার ৫৭০। সংসদ সূত্রে খবর, পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোনও শ্রেণির ক্লাস হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement