আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ঘাটাল ব্লকের কোষাধ্যক্ষ ভরত দাস অধিকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু কর ঘাটাল থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, রবিবার পুলিশি জেরায় ভরতবাবু টাকা আত্মসাতের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কোষাধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করার সঙ্গে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হবে। তদন্ত দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি এক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রবিবার চন্দ্রকোনা রোডের সাতবাঁকুড়ার বাড়ি থেকে ভরত দাস অধিকারী নামে ওই কোষাধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ঘাটাল ব্লকের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিতের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই গ্রেফতার। ধৃতকে রবিবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ ও বিডিও অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ভরতবাবুকে জেরা করে তদন্তে এই কাণ্ডে জড়িত আরও কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে, যাঁরা অনেকেই বিডিও অফিসেরই কর্মী। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের নকল স্ট্যাম্প তৈরি করে এই জালিয়াতি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভরতবাবু। ইতিমধ্যে পুলিশ কয়েকটি ভুয়ো স্ট্যাম্প তৈরির দোকান মালিকের নাম, ঠিকানা জোগাড় করেছে। সোমবার অফিস ছুটি থাকলেও ঘাটাল ব্লক অফিস এ দিন খোলা ছিল। এ দিন ঘাটাল থানার পুলিশ বিডিও অফিসে গিয়ে ব্লকের ট্রেজারি চালান, রেজিস্টার খাতা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি আটক করেছে।
সাধারণ বাসিন্দারা এই ঘটনার জেরে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, অডিট না হলেও সরকারি খরচের হিসাব এবং রাজস্ব ঠিকঠাক জমা পড়ছে কি না তা দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক থেকে স্টেটমেন্ট সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট স্টেটমেন্ট নিয়ে ঘাটাল ট্রেজারি অফিসের সঙ্গে ঠিক আছে কি না তা দেখা হয় নি কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাষির কথায়, “এক মাস কর বাকি থাকলে সেচের সময়ে টাকা দেওয়ার পর তবে জল মেলে। অথচ সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না পড়ে আত্মসাৎ হয়ে গেল কী করে?” এমনকী দীর্ঘ আট বছর ধরে কেন অডিট হল না, অডিট করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে কেন জোর দেওয়া হয়নি সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ঘাটাল ব্লকের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিত। সাধারণ বাসিন্দাদের দাবি, আট বছর আগে এই গাফিলতি ধরা পড়লে, এত বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হত না।