দেহ উদ্ধারের পর। —নিজস্ব চিত্র
কংসাবতী নদীতে স্নান করতে নেমে শুক্রবার দুপুরে তলিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতার আশুতোষ কলেজের দুই ছাত্র। শনিবার সকালে প্রায় ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় ডুবুরিরা উদ্ধার করলেন তন্ময় প্রামাণিক (১৮) এবং অতনু রাজবংশী (১৯) নামে ওই দুই ছাত্রের নিথর দেহ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুই ছাত্রের কেউই সাঁতার জানতেন না। তাঁরা দু’জনেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অবধেশ পাঠক বলেন, “ওই দুই ছাত্র তলিয়ে যাওয়ার অনেক পরে পুলিশ খবর পায়। রাতে নদীতে ডুবুরি নামানো সম্ভব ছিল না। সকালেই ডুবুরির ব্যবস্থা করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করা হয়।” কিন্তু শুক্রবার দুপুরে ওই ঘটনার পরে পুলিশকে এত দেরিতে জানানো হল কেন? ওই দুই ছাত্রের সঙ্গী কিংবা জেলা পুলিশের কর্তাদের কাছে সদুত্তর মেলেনি।
তন্ময় ও অতনু ভূগোল এবং ইংরেজি অনার্সের ছাত্র ছিল। তাঁদের বাড়ি কলকাতার শহরতলি রহড়া ও টিটাগড়ে। কলেজের সহপাঠী স্নেহাশিস ভট্টাচার্য খড়্গপুরের বাসিন্দা। অসুস্থ স্নেহাশিসকে দেখতেই তাঁরা বৃহস্পতিবার কলেজ শেষে খড়্গপুরে তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কলকাতা থেকে এসেছিলেন আরও এক সহপাঠী। ওই দিন দুপুরে তিন বন্ধু মিলে নদীতে স্নান করতে নেমেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদার জানান, কংসাবতী নদীর অধিকাংশ জায়গায় নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলেছে বালি খনন। নদীর উপরে সেতু লাগোয়া অন্তত ৫০০ মিটার এলাকা থেকে বালি তোলা যায় না। নদী পাড় থেকেও মাটি ও বালি খননও আইনসিদ্ধ নয়। তবে সে নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কংসাবতী জুড়ে খনন চলছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এর ফলে নদীর বহু জায়গায় গভীর খাত তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি কংসাবতী জলাধার থেকে জল ছাড়ায় নদীতে স্রোতও ছিল। গভীর খাত আর স্রোতের টানে বেশ কিছু জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ঘুর্ণিও। স্রোতে ভেসে গিয়ে এমনই কোনও ঘূর্ণিতে তলিয়ে গিয়েছিল তন্ময় ও অতনু বলে মনে করছে পুলিশ।
বামপ্রার্থী আক্রান্ত, ধৃত তৃণমূল সমর্থক
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী তাপস সিংহ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আরও এক তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত রবীন্দ্রনাথ চিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল বাপন সাউ ও মিঠুন সাউ নামে আরও দুই সমর্থককে। শনিবার ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত নান্টু প্রধান ও পিন্টু প্রধান এখনও অধরা। বামেদের অভিযোগ, মূল অভিযুক্তরা এলাকাতেই রয়েছেন তবে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ফেরার। আগামী ১২ মে রাজ্যে শেষ দফা নির্বাচন। এই দিন নির্বাচন হবে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে। শুক্রবার নির্বাচনী প্রচারে রোড শোয়ে বেরিয়েছিলেন এই লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএমের প্রার্থী তাপসবাবু। ভগবানপুর-১ ব্লকের মহম্মদপুর-১ অঞ্চলের দেড়েদিঘি বাজারের কাছে রোড শো-এর সময় তৃণমূলের লোকজন তাপসবাবুর উপর চড়াও হয়ে তাঁকে লাঠি, রড দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় গাড়িও। রেহাই পাননি প্রার্থীর দেহরক্ষী। জখম তাপসবাবুকে ভর্তি করা হয় ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সিপিএমের তরফে তৃণমূলের মোট ৩০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।