কৃষকসভার জাঠায় বাদ কেশপুর-গড়বেতা

রাজ্যজুড়ে কৃষক জাঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের কৃষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা। প্রতিটি ব্লকে এই জাঠা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। একদা লালদুর্গ বলে পরিচিত গড়বেতা-কেশপুরে অবশ্য এই কর্মসূচি এড়াচ্ছে কৃষকসভা। সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গড়বেতা- কেশপুরে কৃষক জাঠা হবে না। জেলার বাকি ২৭টি ব্লকে জাঠা হবে। একদা লালদুর্গ বলে পরিচিত ওই দুই এলাকায় কৃষকসভার কর্মসূচি এড়ানো নিয়ে ইতিমধ্যে সংগঠনের অন্দরে কিছু প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share:

রাজ্যজুড়ে কৃষক জাঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের কৃষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা। প্রতিটি ব্লকে এই জাঠা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। একদা লালদুর্গ বলে পরিচিত গড়বেতা-কেশপুরে অবশ্য এই কর্মসূচি এড়াচ্ছে কৃষকসভা। সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গড়বেতা- কেশপুরে কৃষক জাঠা হবে না। জেলার বাকি ২৭টি ব্লকে জাঠা হবে। একদা লালদুর্গ বলে পরিচিত ওই দুই এলাকায় কৃষকসভার কর্মসূচি এড়ানো নিয়ে ইতিমধ্যে সংগঠনের অন্দরে কিছু প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

সংগঠনের অন্দরে যখন কর্মীদের এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থেকে লড়াইয়ের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আগে থেকেই কেন পিছু হটা?

কৃষকসভার এক জেলা নেতার কথায়, “পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সংগঠনের জেলা সম্পাদক হরেকৃষ্ণ সামন্ত বলেন, “গড়বেতা-কেশপুরে এই কর্মসূচি হলে যে কোনও সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা চাই না অশান্তি হোক।” হরেকৃষ্ণবাবুর তির শাসক তৃণমূলের দিকে। তাঁর আশঙ্কা, তৃণমূলের লোকজন কর্মসূচি বানচাল করতে পারে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই আশঙ্কা অমূলক বলে জানিয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “লোকজন না পেয়ে কেউ কোনও কর্মসূচি এড়ালে আমরা কী করব!” তাঁর কথায়, “মানুষ আর সিপিএমকে চাইছে না! মানুষই ওদের বয়কট করেছে, তৃণমূল নয়!”

Advertisement

মূলত, জনসংযোগের লক্ষ্যেই এই কৃষক জাঠা বলে সংগঠন সূত্রে খবর। ১৫-১৯ অক্টোবর জাঠা হবে। কৃষকসভার জেলা নেতৃত্ব জানান, ১০ দফা দাবিতে জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২৩৬টি পঞ্চায়েতে এই কর্মসূচি হবে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে ৫০-১০০ জনের একটি সুসজ্জিত জাঠা স্থানীয় মানুষদের নিয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে প্রচার করবে। বড় গ্রামে অল্প সময়ের জন্য সভা হবে। সভায় গ্রামের মানুষেরাই তাঁদের স্থানীয় সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন। আগামী ১৯ অক্টোবর ব্লক কেন্দ্রগুলোয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে জাঠা কর্মসূচি শেষ হবে। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে কৃষকসভার জেলা নেতৃত্ব জানান, জাঠার স্বেচ্ছাসেবকেরা দুপুরের এবং রাতের খাবার স্থানীয় এলাকার মানুষজনের বাড়িতেই খাবেন। স্থানীয়দের বাড়িতেই রাত্রিবাস করবেন।

ঝাড়গ্রাম মহকুমায় অবশ্য এটা হবে না। এ ক্ষেত্রে দিনের জাঠা শেষে স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাবেন। কেন জেলার বাকি তিন মহকুমায় এক নির্দেশ, ঝাড়গ্রামে অন্য নির্দেশ? কৃষকসভার জেলা সম্পাদকেুর কথায়, “ঝাড়গ্রামের পরিস্থিতি অন্য। ওখানে বিরোধীপক্ষ আমাদের যে কোনও কর্মসূচির উপরই আক্রমণ করে।” যদি জাঠা আটকে দেওয়া হয়? হরেকৃষ্ণবাবু বলেন, “যেখানে জাঠা আটকানো হবে, সেখানেই আমরা অবস্থান করব।” সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষকসভার রাজ্য সহ- সভাপতি তরুণ রায়, সংগঠনের জেলা সভাপতি ডহরেশ্বর সেন প্রমুখ।

সংগঠন সূত্রে খবর, জেলায় জাঠা কর্মসূচিতে সামিল হবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার প্রমুখ। আগামী ১৯ অক্টোবর নারায়ণগড়ে সূর্যকান্তবাবুর কর্মসূচি রয়েছে। বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুর এক সময় সিপিএমের দুর্ভেদ্য ঘাঁটিই ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরপরই ছবিটা বদলে যায়। হারানো মাটি ফিরে পেতেই এমন কর্মসূচি খবর। জনভিত্তি হ্রাস পাওয়ার কিছু কারন আগেও দলীয়স্তরে চিহ্ণিত করা হয়েছে। তাও জনসংযোগে ঘাটতি থেকে গিয়েছে। কৃষকসভার এক জেলা নেতার কথায়, “সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা মানুষের কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে। কী ছিল, কী হয়েছে, মানুষই বা কী চেয়েছিলেন, তাই তুলে ধরব। মূল্যবৃদ্ধি, একশো দিনের কাজ, কৃষকের স্বার্থ, চিটফাণ্ড, নারীর মর্যাদা, গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কিত সহ ১০ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement