তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে ভোটের আগে উত্তপ্ত হচ্ছে কেশপুর। বৃহস্পতিবার রাতে কেশপুরের গরগোজপোতায় দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের একদল লোক আচমকা দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। শ্যামসুন্দর সাঁতরা নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধও হয়েছেন। শুরুতে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। শুক্রবার কেশপুরে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। শ্যামসুন্দরবাবুর স্ত্রী রূপালীদেবীর সঙ্গে তিনি দেখাও করেন। ঠিক কী হয়েছে শোনেন। রূপালিদেবীর কথায়, “রাতে হঠাৎই হামলা হয়।” কেশপুরের সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই বলেন, “তৃণমূলের লোকেরাই হামলা করেছে। ভোটের আগে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।”
তৃণমূল অবশ্য হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, স্থানীয় ভাবে কোনও গোলমাল হলে হয়ে থাকতে পারে। তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, “গরগোজপোতায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। মিথ্যে অভিযোগ।” শুক্রবার সকালে কেশপুরে সভা করে সিপিএম। বিকেলে মিছিল করে তৃণমূল। দু’দলের পিঠোপিঠি কর্মসূচি থেকেই স্পষ্ট, বিনা লড়াইয়ে কেউই রাজনৈতিক জমি ছাড়তে নারাজ। ভোট পরবর্তী অশান্তিও অব্যাহত। মেদিনীপুর সদর ব্লকের ছেড়ুয়া ও রামনগরে বৃহস্পতিবার রাতে গোলমাল হয়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, ছেড়ুয়ায় দলের কর্মীদের উপর হামলা হয়েছে। এক মহিলা কর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে, রামনগরে বেশ কয়েকটি সিপিএম পরিবারের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিজয় পাল বলেন, “ভোটের পরও সন্ত্রাস চলছে। তৃণমূলের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস করছে। ছেড়ুয়ায় আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মারধর করা হয়েছে। রামনগরে আমাদের সমর্থক বলে পরিচিত বেশ কয়েকটি পরিবারের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। এ সব আর কতদিন চলবে?” এ ক্ষেত্রেও তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “এমন ঘটনার কথা শুনিনি। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”