কেশপুর কলেজে নবীনবরণ ঘিরে টিএমসিপি-র মারামারি

নবীনবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে মারামারিতে জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠী। এর জেরে দু’পক্ষের কয়েক জন জখম হন। অবশ্য কারও আঘাতই গুরুতর নয়। ঘটনাটি কেশপুর কলেজের। এই ঘটনায় ফের বিড়ম্বনায় শাসক দল। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, ঘটনার কথা জানতে পেরে দলের জেলা নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২৬
Share:

মেডিক্যালে জখম ছাত্র ফরহাদ। নিজস্ব চিত্র।

নবীনবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে মারামারিতে জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠী। এর জেরে দু’পক্ষের কয়েক জন জখম হন। অবশ্য কারও আঘাতই গুরুতর নয়। ঘটনাটি কেশপুর কলেজের। এই ঘটনায় ফের বিড়ম্বনায় শাসক দল। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, ঘটনার কথা জানতে পেরে দলের জেলা নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ।

Advertisement

প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউই কিছু বলতে নারাজ। উল্টে তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের বিস্ময়, “মারামারি? কোথায়? আমার কাছে তেমন কিছু খবর নেই!” দলের জেলা নেতা তথা কেশপুর কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি চিত্ত গড়াই অবশ্য মানছেন, কলেজে একটা ঘটনা ঘটেছে। তাঁর দাবি, “সামান্য একটা ঘটনা ঘটেছে। বড় কিছু নয়! ভুল বোঝাবুঝি থেকে কথা কাটাকাটি হয়! এর বেশি কিছু নয়!” কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুশান্ত দোলুইও বলেন, “তেমন কোনও গোলমাল হয়নি।” আর টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির বক্তব্য, “ভুল বোঝাবুঝি থেকে সামান্য একটা ঘটনা ঘটে! পরে তা মিটেও গিয়েছে!”

ঘটনাটি ঠিক কী? আচমকা কেনই বা শুক্রবার কলেজ শুরু পরপরই মারামারিতে জড়াল টিএমসিপির দুই গোষ্ঠী? জানা গিয়েছে, আজ, শনিবার কেশপুর কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠান রয়েছে। ছাত্র সংসদের উদ্যোগেই এই অনুষ্ঠান হয়। নবীনবরণ অনুষ্ঠান ঘিরেই মারামারির ঘটনাটি ঘটে। একপক্ষ দাবি করে, অনুষ্ঠানের আয়োজন তারাই করবে। অন্যপক্ষও এই একই দাবি করে। কেশপুরে তৃণমূলের যেমন গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে, তেমন টিএমসিপির মধ্যেও গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। অবশ্য নেতৃত্ব এই বিবাদের কথা মানতে চান না। কেশপুর কলেজের ছাত্র সংসদ রয়েছে টিএমসিপির হাতে। এখন এখানে অন্য কোনও ছাত্র সংগঠনের প্রভাব নেই। চলতি বছর ছাত্র সংসদ গঠন ঘিরেই টিএমসিপির দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়। দু’টি প্যানেল জমা পড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। পরে অবশ্য ভোটাভুটি এড়িয়েই সংসদ গঠন হয়। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হন রাজেশ মল্লিক। গোড়ায় অনেকে অবশ্য শেখ আমিন সাহানিকেই সংসদের সাধারণ সম্পাদক করতে চেয়েছিলেন। কলেজ সূত্রে খবর, মারামারির সময়ে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফরহাদ আলি তিন তলার ক্লাসঘরে লুকিয়ে যায়। পরে ঘুরপথে কলেজের বাইরে বের হয়। বাড়ি ফেরার জন্য বাসও ধরে। অভিযোগ, পরে তাঁকে বাড়ি থেকে মারিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তার হাতে পায়ে আঘাত রয়েছে। ফরহাদ মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

সংসদ গঠন হয়েছে। তবে বিভাজন রয়েই গিয়েছে। এ দিন রাজেশের অনুগামী বলে পরিচিতদের সঙ্গে আমিনের অনুগামী বলে পরিচিতরাই মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। কেশপুরে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে দেদার খরচ হয় বলে অভিযোগ। গেল বার প্রায় ৩ লক্ষ ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যেখানে প্রাথমিক ভাবে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে ধরা হয়েছিল। আর এ বার শুরুতেই ২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা খরচ হবে বলে ধরা হয়েছে! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক ছাত্রের কথায়, “এত টাকা খরচ করে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হলে গোলমাল হবেই! গোলমালের মূলে তো টাকার ভাগ বাঁটোয়ারাই! একপক্ষ বলছে, তাদের পছন্দ করা ড্যান্স ট্রুপই পারফর্ম করবে। অন্যপক্ষ বলছে, তাদের পছন্দ করা ড্যান্স ট্রুপকেও পারফর্ম করার সুযোগ করে দিতে হবে!”

সত্যিই কী তাই? চেষ্টা করেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি রাজেশ মল্লিক এবং শেখ আমিন সাহানির সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার নবীনবরণ অনুষ্ঠান ঘিরেও কলেজে গোলমাল হতে পারে বলে আশঙ্কা। কেশপুর কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি চিত্তবাবুর আশ্বাস, “আশঙ্কার কিছু নেই। সুষ্ঠু ভাবেই নবীনবরণ অনুষ্ঠান হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement