অভিযুক্ত আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাস।
স্কুলের কম্পিউটার রুম, অথচ সেখানে কম্পিউটার নেই একটিও। বদলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওই ঘরে পরিপাটি করে পাতা বিছানা। দেওয়ালে টাঙানো আয়না।
ঘটনাস্থল অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর পরিচালিত আদিবাসী স্কুল ‘ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়’। স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনগ্রসর দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রকল্প আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাস ওই ঘর থেকে কম্পিউটার এবং চেয়ার-টেবিল বের করে সপরিবার থাকার বন্দোবস্ত করেছেন বলে অভিযোগ। প্রতি সপ্তাহে শনি ও রবিবার স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে এসে ওই ঘরে রাত কাটান। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অভদ্র আচরণ ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের গালিগালাজেরও অভিযোগ উঠেছে ।
সৌমেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে স্কুলের টিচার ইন-চার্জের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে ১২১ জন আদিবাসী ছাত্রী। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরাও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সুশান্ত চক্রবর্তীকে লিখিত অভিযোগ জানান। একলব্য স্কুলের টিচার ইন-চার্জ নৃপেন টুডু বলেন, “ছাত্রীদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠানো হয়েছে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক সুশান্তবাবু বলেন, “জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলুন।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার বক্তব্য, “খোঁজ নিয়ে দেখছি।” সৌমেন্দুবাবু দুর্ব্যবহার ও অভদ্র আচরণের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও স্কুলে রাত কাটানোর কথা মানছেন। তবে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, পড়াশোনার মানোন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ করেছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে।
আদিবাসী এই স্কুলে পড়ুয়া রয়েছে ৩২০ জন। রয়েছে ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা হস্টেল এবং শিক্ষক-কর্মীদের আবাসন। স্কুল সূত্রের খবর, পূর্বতন আধিকারিকেরা কেউই এখানে রাতে থাকতেন না। তবে প্রয়োজনে কর্মী আবাসনে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে সৌমেন্দুবাবু জেলা প্রকল্প আধিকারিকের দায়িত্ব নেন। মে মাস থেকে প্রতি শনি-রবি স্কুলে রাত কাটাতে শুরু করেন। স্কুল সূত্রের খবর, দোতলায় দু’টি কম্পিউটার রুমের মধ্যে একটির এসি বিকল। যে ঘরে এসি সচল, মে মাস থেকে সেটিকে শোওয়ার ঘর বানান সৌমেন্দুবাবু। ওই ঘরের কম্পিউটার ও চেয়ার-টেবিলের ঠাঁই হয় পাশের ঘরে। ফলে, শিকেয় উঠেছে কম্পিউটার ক্লাস।