মঞ্চে বাম নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের কাজ সব ব্লকে চালু রাখা-সহ ন’দফা দাবির সমর্থনে শুক্রবার বামপন্থী দলসমূহের ডাকে মেদিনীপুর শহরে অবস্থান- বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। কর্মসূচিতে সামিল হয় এসইউসি-ও। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে গাঁধীমূর্তির পাদদেশ অন্যতম। রিং- রোডের একপাশে কর্মসূচি চলায় রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে এই এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এ দিনের অবস্থান-বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা, আরএসপির জেলা সম্পাদক শক্তি ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অশোক ভট্টাচার্য, এসইউসির জেলা সম্পাদক অমল মাইতি প্রমুখ।
কর্মসূচি থেকে কেন্দ্র-রাজ্য দুই সরকারেরই সমালোচনা করেন বাম নেতৃত্ব। নেতৃত্বের মতে, মানুষ এখন বুঝতে পারছেন দু’দিকেই বিপদ। একদিকে রাজ্য সরকার জনবিরোধী নীতি নিয়ে চলছে। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিও জনবিরোধী। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “চক্রান্ত-আক্রমণ চলছে। আমরা জানি, আগামী দিনে এ সব আরও বাড়বে। তবে এ ভাবে বামপন্থীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।” তাঁর কথায়, “গণপ্রতিরোধই পারে জনস্বার্থবিরোধী কাজকে প্রতিহত করতে।” সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা বলেন, “অর্জিত অধিকার রক্ষার স্বার্থেই শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজ্য সরকারের শিল্পনীতি ও উদ্যোগহীনতা পশ্চিমবঙ্গকে শিল্পের থেকে পিছিয়ে দিচ্ছে। সরকারি উদ্যোগের অভাবে শিল্প- পুঁজি অন্য রাজ্যে জায়গা খুঁজে নিচ্ছে। এই অবস্থায় শ্রমিক কখনও চুপ করে বসে থাকতে পারে না।”
কলকারখানা- শিল্প বন্ধ হওয়ার বিরুদ্ধে, রাজ্য সরকারের উদ্যোগহীনতার বিরুদ্ধে, এখানকার শ্রমিকের শ্রমে অর্জিত মুনাফা অন্যত্র চালান ও বিনিয়োগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে শ্রমিককেই এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি। দিন কয়েক আগেই শহরে সাম্প্রদায়িকতা- বিরোধী মিছিল করে বামেরা। মিছিলের ভিড় দেখে উজ্জীবিত হয় বাম- শিবির। লোকসভা ভোট পরবর্তী সময় লাল ঝাণ্ডা নিয়ে এত বড় মিছিল এর আগে হয়নি। অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও ভাল ভিড় হয়েছিল। অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিআই নেতা প্রবোধ পণ্ডা, সিপিএম নেতা তরুণ রায় প্রমুখ।
সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী মিছিলে এসইউসি সামিল হয়নি। শহরে তারা পৃথক ভাবে দিনটি পালন করে। অবস্থান- বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অবশ্য এসইউসি সামিল হয়। এ দিন দলের কর্মী- সমর্থকেরা মিছিল করে গাঁধীমূর্তির পাদদেশের সামনে যান। এ দিন এসএফআই নেতা তিলক টুডুর মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। ২০০৯ সালে মাওবাদীদের হাতে প্রাণ হারান তিলক টুডু। এই ছাত্র নেতার বাড়ি শালবনির বেঁউচ্যায়। তিলক টুডুর বাবা-মা শহরে এসে বামেদের কর্মসূচিতে যোগ দেন।