পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দমকল কর্মীরা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
আগুনের কবলে এ বার খোদ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়!
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেল তিনটে নাগাদ তমলুক শহরের মানিকতলায় পুলিশ সুপারের অফিস ঘরে আগুন লাগে। এর জেরে একটি টিভি, এসি মেশিন-সহ বেশ কিছু আসবাবপত্রের ক্ষতি হয়। তবে পাশের ঘরে থাকা রেকর্ড রুম (নথিপত্র রাখার ঘর) অক্ষত রয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। আগুন লাগার সময়ে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অফিসে না থাকলেও দফতরের অন্য পুলিশ কর্মীরা ছিলেন। দমকলবাহিনী ও পুলিশ কর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে সকলের স্বস্তি ফেরে।
তমলুক দমকল কেন্দ্রের আধিকারিক কিশোর ধাড়া বলেন, “শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন বলে অনুমান। তবে দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে।” পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতে ফরেনসিক তদন্ত করানো হচ্ছে।”
২০০২ সালে প্রশাসনিক ভাবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা গঠনের পর থেকেই তমলুক শহরের মানিকতলায় হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে থাকা বেসরকারি মালিকানাধীন একটি চারতলা বাড়ির উপরের দু’টি তলা ভাড়া নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের অফিস চলছে। ওই ভবনের তিনতলায় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর)-এর অফিস ঘর, রেকর্ড রুম ছাড়াও পুলিশের বিভিন্ন দফতরের অফিস রয়েছে। চারতলায় রয়েছে পুলিশের কনফারেন্স হল-সহ কিছু দফতরের অফিস। বাড়ির নিচের তলা ও দোতলায় জেলা কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের অফিস চলছে।
শুক্রবার কাজের দিন থাকায় কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্র ও পুলিশ সুপারের অফিসে লোকজনের আনাগোনা ছিল। পুলিশ কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য কয়েক কোটি টাকাও ছিল অফিস ভবনে। ফলে ভিড় ছিল ভালই। বিকেল ৩টা নাগাদ তিনতলায় থাকা পুলিশ সুপারের নিজস্ব ঘরে প্রথম আগুন লাগে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মীদের একাংশ অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তমলুক দমকল কেন্দ্রেও খবর যায়। দ্রুত দু’টি ইঞ্জিন-সহ দমকল বাহিনী আসে। ছিল পুলিশের জলকামানও। এক ঘণ্টার বেশি সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে পুলিশ সুপারের অফিস ঘরে থাকা কম্পিউটার, টিভি-সহ বেশ কিছু জিনিসপত্র আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দিন গিয়ে দেখা গেল, পুলিশ সুপারের অফিস ঘরের সংলগ্ন একটি ঘরও (অ্যান্টি চেম্বার) আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিজের অফিস ঘরে আগুন লাগার খবরে আসেন সুকেশবাবু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভরত রাঠৌর-সহ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা। পরে আসেন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য।
এ দিকে, খোদ জেলা পুলিশের সদর দফতরে আগুন লাগায় ওই অফিসের অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা অফিস ভবনে হাতে গোনা কয়েক’টি আপদকালীন অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র রাখা হলেও ‘ফায়ার অ্যালারমিং’ ব্যবস্থা নেই। ফলে আগুন লাগলেও প্রথম প্রথম উপস্থিত কেউই তা বুঝতে পারেননি। পরে ধোঁয়া দেখে পুলিশ কর্মীরা বুঝতে পারেন আগুন লেগেছে। ততক্ষণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে!