জামবনির ওড়ো গ্রামে পাঁচ বান্ধবীর আত্মহত্যার পিছনে কারও প্ররোচনা ছিল কি-না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই কিশোরীদের অভিভাবকরা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেন নি। নিয়ম মাফিক অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত) মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় ওড়ো গ্রামের বড়পুকুর পাড়ে ছয় বান্ধবী কীটনাশক পান করলেও, বিষের বাটি খালি না-করে পালিয়ে আসে পূজা নায়েক। পূজার চিকিৎসা চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পুলিশ ও সংবাদ মাধ্যমকে পূজা জানিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের প্রেমিক ছিল। শিব রাত্রির মেলায় ছেলেগুলির সঙ্গে তাদের একসঙ্গে দেখে ফেলেন কিছু গ্রামবাসী। সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় শুরু হয় অভিভাবকদের শাসন ও গঞ্জনা। তার জেরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত।
কিন্তু পূজার এই বয়ানে সন্তুষ্ট হতে পারছে না পুলিশ। পুলিশের একটি মহলের ধারণা, পূজা কিছু কথা গোপন করছে। একসঙ্গে ছয় জনের আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের পিছনে সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। পূজা সুস্থ হলে তাকে জেরা করে বিস্তারিত জানা যাবে। মৃত পাঁচ কিশোরী ও পূজার অভিভাবকরা তথ্য গোপন করছেন কি-না সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যদিও পূজার দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন মৃত কিশোরীদের অভিভাবকরা। তাঁদের পাল্টা দাবি, স্বভাব-লাজুক ছয় বান্ধবীর আচার আচরণে অস্বাভাবিকতা ছিল না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতদের অন্যতম সরস্বতী চালকের বিয়ের ঠিক হয়ে গিয়েছিল। আর এক মৃত কিশোরী বেবির বিয়ের দেখাশোনা চলছিল। সম্প্রতি সরস্বতীর হবু শ্বশুর বাড়ির তরফের কয়েকজন ওড়োর শিব রাত্রির মেলায় বেড়াতে এসেছিলেন। মেলার পরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের পিছনে নির্দিষ্ট কোনও কারণ রয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় ওড়োয় গিয়ে মৃতদের পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে আসেন। সিপিএমের জামবনি জোনাল সম্পাদক হেনা শতপথী ও ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক অমর বসুও মঙ্গলবার ওড়োয় গিয়ে মৃতদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক মহাদেব বসাক ও বিজেপি-র আদিবাসী মোর্চার রাজ্য সভাপতি বিকাশ মুদি এ দিন ওড়োয় যান।