বৌভাতে অতিথিদের ফুলগাছ উপহার সৌরভের

পাঁচ বছর বয়সে দাদু গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে রথের মালায় গিয়ে গোলাপের চারা কিনে দেওয়ার বায়না ধরেছিল সৌরভ। গোবিন্দবাবু তা কিনে না দেওয়ায় কান্না জুড়ে দেয় সে।

Advertisement

সৌমেশ্বর মণ্ডল

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

সাজ: বাহারি গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠান বাড়িও। নিজস্ব চিত্র।

অনুষ্ঠান বাড়ির সব ক’টি দেওয়াল জুড়ে পোস্টার সাঁটানো— ‘গাছ কাটবেন না’, ‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’ ও ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’। তার পরে আমন্ত্রিত সব অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হল ফুলগাছের চারা। নিজের বৌভাতের আসরটি এমনই ‘সবুজ’ করে তুললেন মেদিনীপুর শহরের বল্লভপুরের বাসিন্দা সৌরভ মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

পাঁচ বছর বয়সে দাদু গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে রথের মালায় গিয়ে গোলাপের চারা কিনে দেওয়ার বায়না ধরেছিল সৌরভ। গোবিন্দবাবু তা কিনে না দেওয়ায় কান্না জুড়ে দেয় সে। ফলে পরের দিন সকালেই গোলাপ গাছ কিনে আনেন দাদু। সেই ছোটবেলা থেকেই ফুলগাছ ঠিক এতটাই ভালবাসেন সৌরভ। স্কুলের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে ফুলগাছের চারা কিনে আনত ছোট্ট সৌরভ। বড় হয়ে নিজের খরচে বাড়ির ছাদে সাজিয়েছেন দুষ্প্রাপ্য নানা প্রজাতির অ্যাডনিয়াম। ২০০৬ সাল থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় তাঁর পরিচর্যা করা ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকার মতো বাহারি ফুলের গাছ জিতে নেয় পুরস্কার। বিভিন্ন ফুলমেলাতেও শোভা পায় তাঁর তৈরি ফুলগাছ।

শুক্রবার জগন্নাথ মন্দির এলাকার এক লজে সৌরভের বৌভাতের আসরের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে পৌঁছে বিস্মিত হয়ে যান অতিথি থেকে ক্যাটারার, ডেকরেটারের সকলেই। চারপাশে পোস্টার সাঁটা, রয়েছে প্রায় কয়েশো টবও। খাবার টেবিলে মেনুকার্ডের সঙ্গে সবার হাতে তুলে দেওয়া হয় মিনি টগর ফুলের চারা। সৌরভের কথায়, “আমার পক্ষে একসঙ্গে ৫০০ লোক জড়ো করে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমার বৌভাতের অনুষ্ঠানের দিনটিকেই এ ভাবে বেছে নিয়েছি সেই কাজে।” সৌরভের স্ত্রী জাগৃতি মুখোপাধ্যায় বলেন, “গাছের চারা পেয়ে অতিথিদের মুখে যে হাসি দেখেছি, সেটাই জীবনের বড় পাওয়া।” সমগ্র অনুষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সৌরভের বন্ধু কৌশিক পাল।

Advertisement

সৌরভের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রূপনারায়ণ রেঞ্জের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্তও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement