দিনের আলোর মুখ দেখতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের নন্দীগ্রাম দেশপ্রাণ রেল প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।
দিনের আলোর মুখ দেখতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের নন্দীগ্রাম দেশপ্রাণ রেল প্রকল্প। কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের জোট থেকে তৃণমূল বেরিয়ে আসার পর নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্প রূপায়ণের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এ বার নতুন করে এই প্রকল্পটি প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। ইতিমধ্যে এই রেললাইনের কাজ পুনরায় চালু করার জন্য রেলওয়ে বোর্ডের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে খবর। তমলুকের (তৃণমূল) সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, “দেশপ্রাণ-নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের জন্য পুনরায় কেন্দ্রের অনুমোদন মিলেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে আমি আশাবাদী।’’
দিব্যেন্দুর দাবি, “আমি একাধিক বার রেলমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে নন্দীগ্রাম প্রকল্প শুরু করার আবেদন জানিয়েছিলাম। রেলমন্ত্রী সেই আবেদন শুনেছেন, এতে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।’’ তাঁর মতে, “সাম্প্রতিক সময়ের নিরিখে এ বারের কেন্দ্রের বাজেটে বাংলার জন্য অনেক বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই বাজেটে দেশপ্রাণ নন্দীগ্রাম রেল লাইনের প্রাথমিক কাজ নতুন ভাবে শুরু করার জন্য পুনরায় অনুমোদন দিয়েছে। আমি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে একাধিক বার চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি নন্দীগ্রামের মানুষের কথা ভেবেছেন।’’
দিব্যন্দু আরও বলেন, “উন্নয়নের কাজে কোনও রাজনীতি নয়। পূণ্যভূমি নন্দীগ্রাম ২০০৭ সাল থেকে বাংলার পরিবর্তনের পীঠস্থান। সেই নন্দীগ্রামের বহু মানুষ কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। একটা সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল। সেই কাজ প্রায় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু আইনি জটিলতা, চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল। সেটা এখন অনেকটাই মিটে গিয়েছে। অনেক জায়গায় কাজ এগিয়ে গিয়েছে। ওভার ব্রিজ হয়ে গিয়েছে। স্টেশন বিল্ডিংও কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে।’’
কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতার উদ্যোগে দেশপ্রাণ নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পটির সূচনা হয়। এই লাইনটি যুক্ত হচ্ছে দিঘা তমলুক রেল লাইনের দেশপ্রাণ স্টেশনের কাছে। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ থেকে লাইনের জায়গায় মাটি ভরাট, একাধিক ওভারব্রিজ এবং নন্দীগ্রাম স্টেশনের কাজও অনেকটাই এগিয়ে যায়। কিন্তু মাঝপথে মমতা ইউপিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর এই প্রকল্পটিকে ক্রমেই ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একটা সময় প্রকল্পটিকে সম্পূর্ণ স্থগিত করে দেওয়া হয়। স্থানীয় মানুষরাও আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। তবে এ বার সেই প্রকল্পের অনুমোদন মেলায় নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন এলাকাবাসীরা।