ব্যস্ততা: চলছে রাখি তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র
পাটের সুতোয় সাদা আর গোলাপি রং। গোল রাখির মাঝখানে জ্বলে রয়েছে সবুজ, হলুদ, লাল— তিন রঙা আলো। সাবধানতা আর সচেতনতার প্রহরি। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’— মুখ্যমন্ত্রী সচেতনতা প্রকল্পকে সামনে রেখে এ বার রাখি বানিয়েছেন নিমতৌড়ির একটি হোমের প্রতিবন্ধী ছাত্রীরা। সরকারি বরাত নয়, একেবারে নিজেদের ইচ্ছেতেই এক উদ্যোগ। মেয়েরা চান এই রাখি পুলিশের হাতে পৌঁছে দিতে।
হোমের সম্পাদক যোগেশ সামন্ত জানালেন, এ বছর ২৫ হাজার রাখি বানানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন মেয়েরা। তা থেকে কিছু রোজগারও হবে। সেটা জমা পড়বে তাঁদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। একমাস ধরে মারিয়া, সালমা, নাসেরা, পুজা, ইশা, সুমি, প্রিয়াঙ্কারা ব্যস্ত রেশমি ফিতে, পুঁতি, পাটের সুতো নিয়ে। তার সঙ্গে থাকছে কাগজে ছাপা সরকারি প্রকল্পের ছবি।
শুধু ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নয়। কন্যাশ্রীর ছবি দিয়েও রাখি বানানো হয়েছে। হোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কণিকা অধিকারী, অনিমা ঘড়া জানালেন, ২০০৪ সাল হোমের ভাইদের জন্য নিজেরা রাখি বানাতে শুরু করেন মেয়েরা। তারপর থেকে সেই রাখির চাহিদা বেড়েছে। এ বছর প্রায় ১৫ হাজার রাখি বিনামূল্যে বিলি করা হবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২০টি সরকারি হোমের আবাসিকদের জন্য। ন’টি মহিলা হোমে পাঠানো হবে কন্যাশ্রী রাখী। জেলার সব ক’টি থানা, পঞ্চায়েতগুলিতে পাঠানো হবে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ রাখি। রাখির প্যাকেট দিয়ে দেওয়া হবে, ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে যাওয়া বাস বা ট্রাক চালকদেরও। ‘‘সবাইকে তো পরাতে পারব না বাস থামিয়ে, তবু যেন সবাই সুরক্ষিত থাকেন, সেই প্রার্থনা’’, বললেন হোমেরই এক ছাত্রী।
১০ হাজার রাখি সাধারণ মানুষের জন্য বিক্রি করা হবে তমলুক শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্টল করে। অনেক কাজ। তাই ঘুম নেই চোখে। রাখি বানাতে বানাতে খুশির ঝিলিক ঝরে পড়ে সরল মুখগুলোয়।