প্রতীকী চিত্র
শ্বশুরবাড়িতে ভাইফোঁটা সেরে স্বামীর সঙ্গে দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তরুণী। কথা ছিল, সেখানে একমাত্র ভাইকে ফোঁটা দেবেন। তবে সেই কথা আর রাখা গেল না। জাতীয় সড়ক পেরনোর পথে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল তরুণী ও তাঁর দুই সন্তানের। মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন স্বামী। গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভাইফোঁটার দিনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ডেবরার ধামতোড়ে কলকাতা-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জয়ন্তী দাস অধিকারী (২২) নামে ওই তরুণীর। গুরুতর জখম অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর ছেলে পলাশ দাস অধিকারীর (৫)। মেডিক্যালে আনার পরে মারা যায় পিউ দাস অধিকারী (৪)। স্বামী প্রদ্যোত দাস অধিকারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ট্রাক চালক প্রদ্যোতের বাড়ি ধামতোড়ে। সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে নছিপুরে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। রাস্তা পার হওয়ার জন্য জাতীয় সড়কে ডেবরা যাওয়ার লেন পেরিয়ে ডিভাইডারের মাঝামাঝি দাঁড়িয়েছিলেন। তখনই মেদিনীপুরগামী একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটির পিছনে ধাক্কা মারে। ওই গাড়ি চালাচ্ছিলেন গুরুপদ বেরা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক।
প্রায় প্রতি বছরই ভাইফোঁটার দিনে জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছর ভাইফোঁটা উপলক্ষে স্কুটিতে বাপের বাড়ি যাওয়ার পথে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মাতকাতপুরে মৃত্যু হয় এক স্কুল শিক্ষিকার। এ বারেও একই ঘটনা। মৃত জয়ন্তীর শ্বশুর নিতাই দাস অধিকারী বলেন, “নাতনি আমাকে ও আমার ভাইদের ফোঁটা দিয়েছিল। তার পরে আমি বাইরে গিয়েছিলাম। ওঁরা চারজনে বৌমার বাপের বাড়িতে যাচ্ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।”
বোন ও ভাগ্নে-ভাগ্নিকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন জয়ন্তীর দাদা শুকদেব সিংহ। তিনি বলেন, “জয়ন্তী আমার একমাত্র বোন। প্রতিবার ফোঁটা হয় নিবিঘ্নে। এ বার কেন এমন হল বুঝতে পারছি না।”