প্রতীকী ছবি।
মুখরক্ষা হলেও মাত্র ১৯০ ভোটের ব্যবধান চিন্তায ফেলেছে শাসক দলকে। ঝাড়গ্রাম পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছেন তৃণমূলের গোবিন্দ সোমানি। এর আগে এই ওয়ার্ড ছিল বামেদের দখলে। সেই হিসাবে ওয়ার্ডটি নিজেদের দখলে নেওয়ার একটা চ্যালেঞ্জ ছিল তৃণমূলের কাছে।
চ্যালেঞ্জে উতরে গেলেও এত কম ব্যবধান নিয়ে তৃণমূল শিবিরের অন্দরে গুঞ্জন, দলীয় অন্তর্ঘাতের ভোট কমেছে তাদের। কারণ, পেশায় ব্যবসায়ী গোবিন্দবাবুকে প্রার্থী হিসেবে প্রথম থেকেই মানতে রাজি ছিলেন না তৃণমূলের একাংশ। এমনকী প্রচারেও তার আঁচ এসে পড়েছিল। গোবিন্দবাবুর প্রচারেও সে ভাবে দলীয় কর্মীদের ঢল সেভাবে নামেনি। তবে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা গোবিন্দবাবুর সমর্থনে প্রচারে গিয়েছিলেন। মাটি কামড়ে পাল্লা দিয়ে নজরকাড়া প্রচার করেছিল বিজেপি শিবিরও। জিততে না পারলেও লক্ষ্যণীয়, উপ নির্বাচনে অরণ্যশহরে শক্তি বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। প্রায় মুছে গিয়েছে সিপিএম। তাদের প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে।
২০০৩ ও ২০০৮, পর পর দু’টি পুরভোটে এই ওয়ার্ডে জিতেছিল সিপিএম। ২০১৩-র পুরভোটের সময় বাম প্রার্থীর মৃত্যুতে এই ওয়ার্ডে ভোট স্থগিত রেখে বাকি ১৭টি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছিল। ১৬টি ওয়ার্ডে জিতে টানা তিন দশকের বাম পুরবোর্ডকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। ২০১৩-র পুরভোটে ৭ নম্বর ওয়ার্ড-সহ মাত্র চারটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পেরেছিল বিজেপি। বাকি তিনটি ওয়ার্ডে বিজেপি-র প্রাপ্ত ভোট ছিল খুবই কম। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটেও শহরে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট খুবই কম ছিল। এ বার উপনির্বাচনের ফলে বিজেপির ভোট বাড়ার পাশাপাশি বামেদের ভোটব্যাঙ্কে কার্যত ধস নেমেছে।
ঝাড়গ্রাম
উপনির্বাচন: ৭ নম্বর ওয়ার্ড
জয়ী: গোবিন্দ সোমানি (তৃণমূল)। প্রাপ্ত ভোট ৮৮৭।
দ্বিতীয় সমীর দত্ত (বিজেপি)। প্রাপ্ত ভোট ৬৯৭
সাত নম্বর ওয়ার্ডের মোট ভোটার ২,৩৩৮। ভোট পড়েছিল ১,৭৭৯টি। এর মধ্যে তৃণমূল প্রার্থী গোবিন্দ সোমানি পেয়েছেন ৮৮৭টি ভোট (৪৯.৮৫%)। বিজেপি প্রার্থী সমীর দত্ত ৬৯৭টি ভোট (৩৯.১৭%) পেয়েছেন। সিপিএম প্রার্থী পেশায় প্রাথমিক শিক্ষিকা কৃষ্ণা ঘোষ মাহাতোর ঝুলিতে পড়েছে মাত্র ১০৮টি (৬%)ভোট। কৃষ্ণাদেবী-সহ বাকি দুই নির্দল প্রার্থীরও জামানত জব্দ হয়েছে।
এ দিন জেলা কালেক্টরেট চত্বরে ফলাফল ঘোষণা হতেই গোবিন্দবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই জয় মানুষেরই। আগামী এক বছরে ওয়ার্ডের উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।” ২০১৮-র নভেম্বরেই ঝাড়গ্রাম পুরসভার নির্বাচন। তার আগে এই উপনির্বাচনে জেতাটা শাসক ও বিরোধীদের কাছে মান-সম্মানের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফল বলছে, প্রথম রাউন্ডে তৃণমূল পাশ করলেও ঘাড়ে কিন্তু নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি।