ভোট-সংঘর্ষে হাফ সেঞ্চুরি, সরব বিরোধী

ভোট মিটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। তবে সংঘর্ষ থামেনি। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ভোটপর্বে জেলায় ৫৮টি রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে। জখম হয়েছেন ৯১ জন। মৃত্যু হয়েছে এক জনের।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০১:০৫
Share:

সন্ত্রস্ত। কেশপুরে। ফাইল চিত্র।

ভোট মিটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। তবে সংঘর্ষ থামেনি। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ভোটপর্বে জেলায় ৫৮টি রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে। জখম হয়েছেন ৯১ জন। মৃত্যু হয়েছে এক জনের।

Advertisement

এই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করেই জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী- শিবির। বিরোধীদের দাবি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনেরও যে পদক্ষেপ করা উচিত ছিল, ঠিকঠাক ভাবে সেই পদক্ষেপ করা হয়নি। একই সঙ্গে বিরোধী-শিবিরের দাবি, এটা সরকারি হিসেব। ভোটপর্বে জেলায় এর থেকেও বেশি রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে। জখমও হয়েছেন শতাধিক। বিজেপির জেলা সভাপতি ধীমান কোলের মত, ভোটের সময় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল না। থাকলে এত গোলমাল হত না। একই বক্তব্য জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়ার। আর সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘পুলিশ- প্রশাসনের উচিত ছিল আরও কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। শাসক দলের যে সব লোক গোলমাল করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’’

অশান্তির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিকই ছিল। জেলা প্রশাসনের এক কর্তারও দাবি, “জঙ্গলমহল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের ভোটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।।

Advertisement

তা সত্ত্বেও অবশ্য ভোট-সংঘর্ষের সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে আগে সবংয়ে খুন হয়েছেন তৃণমূল কর্মী জয়দেব জানা। সবংয়ে একাধিক সংঘর্ষও হয়েছে। তা ছাড়া, নারায়ণগড়, কেশপুর, মেদিনীপুর সদর, কেশিয়াড়ি, দাঁতন, ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনাতেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় দফার ভোটের দিনও জেলায় ৪টি রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়। পুলিশের হিসেবে, ওই সব ঘটনায় জখম হন ৭ জন। অশান্তির পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধারও চলছে। ভোট ঘোষণা থেকে ভোট পর্যন্ত জেলায় মোট ৪০টি বন্দুক, ৫৭ রাউন্ড কার্তুজ, ৪টি ডিরেকশনাল মাইন, ২টি ডিটোনেটর উদ্ধার হয়েছে।

এ বার ভোট ঘোষণার আগে থেকেই জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল শুরু হয়েছিল। এককথায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চের মধ্য দিয়েই জঙ্গলমহলের এই জেলায় নির্বাচনের দামামা বেজেছিল। কিন্তু অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিকমতো ব্যবহার করা হয়নি। তাদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেই শাসক তৃণমূল সন্ত্রাস চালিয়েছে।

বিরোধী শিবিরের এক নেতার বক্তব্য, “৪ মার্চ নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪ ও ১১ এপ্রিল দু’দফায় ভোট হয়েছে। পুলিশের দেওয়া হিসেবটাই যদি ঠিক বলে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে ৪০ দিনে ৫৮টি রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ, প্রায় রোজ একাধিক রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে। এই পরিসংখ্যানই জেলার আইনশৃঙ্খলার ছবিটা তুলে ধরছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement