হিমঘরের প্রচার-গাড়িতে ভাঙচুর এবং গাড়িতে থাকা লোকজনকে মারধরের অভিযোগ উঠল কেশপুরের কেওটপাড়ায়। শনিবার রাতে এই ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ অবশ্য প্রচার-গাড়ি ভাঙচুরের কথা মানতে চায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী শুধু ঘোষ বলেন, “কেওটপাড়ায় একটা গোলমাল হয়েছিল। পরে তা মিটেও গিয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রাতে কেশপুরের বগছড়ির এক হিমঘরের প্রচার-গাড়ি কেওটপাড়ায় আসে। এই হিমঘরটিতে ২ লক্ষ ৮০ হাজার কুইন্ট্যাল আলু থাকতে পারে। ইতিমধ্যে এই পরিমাণ আলু মজুতও হয়ে গিয়েছে। সেই মতো দিন কয়েক আগে হিমঘর কর্তৃপক্ষ প্রচার-গাড়ি বের করে জানিয়েছিলেন, আপাতত আলু নেওয়া স্থগিত থাকবে। কিন্তু এ বার আলুর ফলন অনেক বেশি হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে তাই আরও ৩০ হাজার কুইন্ট্যাল আলু রাখার সিদ্ধান্ত নেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। সেই মতো শনিবার প্রচার গাড়ি বের করে জানানো হয়, রবি এবং সোমবার হিমঘর খোলা থাকবে। এই দু’দিন আলু রাখা যেতে পারে।
শনিবার রাতে মুগবসান পেরিয়ে প্রচার-গাড়ি যখন কেওটপাড়ার কাছাকাছি আসে, তখনই বাধে অশান্তি। একদল চাষি গাড়ি ঘিরে ফেলেন। তাঁদের অভিযোগ, হিমঘর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলু ব্যবসায়ীদের বোঝাপড়া রয়েছে। প্রচার-গাড়িতে থাকা চালক অনুপম পণ্ডিত এবং হিমঘরের কর্মী মিঠুন দে-কে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বগছড়ির ওই হিমঘর কর্তৃপক্ষের তরফে সোমনাথ মন্ত্রীর কথায়, “কেওটপাড়ার কাছে ২০-২৫ জন আচমকাই প্রচার-গাড়ির উপর চড়াও হয়। চালক-সহ দু’জনকে মারধর করে। ইট ছুড়ে গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়।” কেশপুরে এ বার ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কিন্তু আলুর দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। এক দিকে অতিরিক্ত ফলন, অন্য দিকে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার ব্যাপারে সরকারের গড়িমসি। এই দুইয়ের জেরে এ বার গোড়াতেই বাজারে আলুর দাম কম বলে চাষিদের মত। চলতি মাসের শেষের দিকে পুরোমাত্রায় আলু তোলার কাজ শুরু হবে। তখন আলুর দাম আরও নামতে পারে। এখন জেলায় আলু বিকোচ্ছে কুইন্ট্যাল প্রতি প্রায় দু’শো টাকা দরে। চাষিদের বক্তব্য, এতে চাষের খরচই উঠছে না। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে অসন্তোষও রয়েছে।