প্রতীকী ছবি।
ঘোষণা করে আসন সমঝোতার কোনও কথা জানানো হয়নি। কিন্তু পাঁশকুড়ার জিয়াখালি-হাতিশাল সমবায় নির্বাচনে সিপিএম এবং বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ছে। দেখা গিয়েছে, ৪২টি আসনের ওই নির্বাচনে যেখানে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীর নাম জমা পড়েছে, সেখানে সিপিএম সমর্থিত প্রার্থী নেই। আবার, সিপিএম সমর্থিতরা যেসব আসনে প্রার্থী দিয়েছেন, সেখানে বিজেপির সমর্থিতের প্রার্থী নেই। এতেই বিজেপি এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে আঁতাতের অভিযোগ করছে শাসকদল তৃণমূল।
সম্প্রতি জেলার একাধিক সমবায় সমিতির নির্বাচনে বাম-বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীদের আসন সমঝোতা করতে দেখা গিয়েছে। নন্দকুমারের একটি সমবায় সমিতিতে ওই আসন সমঝোতায় হেরে গিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সমর্থিত প্রার্থীরাও। যা নন্দকুমার-মডেল নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছিল। এমন আবহে আগামিকাল, রবিবার পাঁশকুড়ার জিয়াখালি-হাতিশাল সমবায়ে নির্বাচন। ৪২টি আসন যুক্ত সমবায়ে সবক’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। আর সিপিএম সমর্থিত প্রার্থী ২২টি আসনে রয়েছে। বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী ২০টি আসনে রয়েছে। কোনও ঘোষিত সমঝোতা না হলেও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সিপিএম সমর্থিত এবং বিজেপি সমর্থিতেরা যেভাবে প্রার্থী দিয়েছে, তাতে নির্বাচনে তলে তলে সিপিএম এবং বিজেপি সমঝোতা করছে বলে অভিযোগ তৃণমূল।
পাঁশকুড়া ব্লকে সম্প্রতি তিনটি সমবায় নির্বাচনে তৃণমূল সমথিতেরা জয়ী হয়েছেন। তিনটিতেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বিরোধী দল সিপিএম এবং বিজেপির সমর্থিতেরা। তবে সেখানে কোথাও বাম-বিজেপি সমঝোতার অভিযোগ ওঠেনি। পাঁশকুড়ার জিয়াখালি-হাতিশাল সমবায়ের নির্বাচন প্রসঙ্গে তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘যে বাম-বিজেপি সমর্থিতেরা যেভাবে প্রার্থী দিয়েছেন, তা সমঝোতা ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনও কোনও জায়গায় দুই দলের নেতারা এক সঙ্গে প্রচারে যাচ্ছেন বলেও খবর পাচ্ছি।’’ যদিও ওই অভিযোগ মানতে নারাজ বাম-বিজেপি উভয় পক্ষই। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘হাতিশাল-জিয়াখালি নির্বাচনে যেখানে যেখানে আমাদের সাংগঠনিক ক্ষমতা রয়েছে, সে সব জায়গায় আমরা প্রার্থী দিয়েছি। যেখানে আমাদের সংগঠন দুর্বল সেখানে প্রার্থী দিতে পারিনি। বিজেপি আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য আমাদের প্রার্থী দেওয়া আসনগুলিতে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রার্থী দেয়নি। যাতে লোকে বলে আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমঝোতা হয়নি।’’ আবার, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এবার আমরা সমবায় নির্বাচনে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। সব জায়গায় আমাদের শক্তি নেই। তাই প্রার্থী দিতে পারিনি। সিপিএমের সঙ্গে কোনও সমঝোতা হয়নি।’’
উল্লেখ্য, সমবায়ে বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতার জন্য সম্প্রতি কড়া পদক্ষেপ করেছেন জেলা বাম নেতৃত্ব। দলীয় সদস্যদের সাসপেন্ডও করা হয়েছে। তার পরেও জেলার কিছু এলাকার সমবায়ে এ ধরনের আসন সমঝোতার অভিযোগ উঠছে। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজনৈতিক আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র ব্যক্তি স্বার্থকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তারই পরিণতি এমন ‘আঁতাত’।