শুকুরমণি হাঁসদা (বাঁ দিকে) ও সংক্রান্তি হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলের মধ্যে শিশুদের কান্নার শব্দ! মঙ্গলবার লালগড়ের পডিহা গ্রামের লাগোয়া জঙ্গলে ডালপাতা কুড়োতে গিয়ে শিশুদের কান্নার শব্দ শুনতে পান বাঘাকুলি গ্রামের দম্পতি কার্তিক ও সরস্বতী শবর। দুই বোনকে উদভ্রান্তের মতো ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। লালগড় থানায় গিয়ে ওই বোনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।
পুলিশের কাছে ওই দুই বোন জানিয়েছে, তাদের নাম শুকুরমণি হাঁসদা এবং সংক্রান্তি হাঁসদা। বড় বোন শুকুরমণির বয়স সাত বছর। ছোট বোন সংক্রান্তি ছ’বছর বয়সী। দুই বোনের দাবি, তাদের বাবা মঙ্গল হাঁসদা অনেকদিন ধরেই আলাদা থাকেন। দিন দুয়েক আগে তাদের মা ফুলমণিদেবী জঙ্গলে ছেড়ে চলে যান বলেই তদন্তকারীদের জানিয়েছে দুই বোন। সোমবার শুকুরমণি ও সংক্রান্তি সারাদিন রাত জঙ্গলেই কাটিয়েছে। মঙ্গলবার খিদে আর তেষ্টায় তারা লোকালয়ের খোঁজে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকে। তখনই তাদের দেখতে পান জঙ্গলে ডালপাতা সংগ্রহে যাওয়া ওই দম্পতি। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মেয়ে দুটি স্পষ্ট করে নিজেদের গ্রামের নাম বলতে পারছে না। কখনও বলছে মাঝগেড়িয়া, কখনও বলছে মাজুগেড়া। বাঁকুড়া ও বেলপাহাড়িতে এমন নামের গ্রাম আছে। তাই বেলপাহাড়ি ও বাঁকুড়ার বারিকুল থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। শিশুদের আপাতত মেদিনীপুরে একটি সরকারি হোম রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। পুলিশের অনুমান, ইচ্ছাকৃত ভাবে দুটি শিশুকে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে যাওয়া হয়েছে। মাসখানেক আগে পডিহা জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল। বাঘ এখন লালগড়ের দিকে নেই বলেই দাবি বন দফতরের। তবে লালগড়ের জঙ্গলে বন শুয়োর, নেকড়ে, বন বিড়ালের মতো হিংস্র প্রাণি রয়েছে। শিশু দু’টি বরাত জোরে রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। ওই শবর দম্পতি সচেতন নাগরিকের কর্তব্য পালন করে শিশু দুটিকে থানায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে পুলিশ।