অপেক্ষা: কুবাইয়ের এই যানজটে দাঁড়ি পড়বে বলে আশা। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিনের সমস্যা শেষমেশ মিটতে চলেছে। মেদিনীপুর সদর মহকুমায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে দু’টি রেল ক্রসিংয়ের উপর দু’টি উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ মন্ত্রক। গড়বেতা-৩ ব্লকের চন্দ্রকোনা রোডের কাছে কুবাই ও কদমডিহা রেল ক্রসিংয়ে দু’টি উড়ালপুলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া ভাদুতলা ও গড়বেতার মাঝে জাতীয় সড়কের আরও পাঁচটি ছোট সেতু ও সাতটি কালভার্ট নতুন করে তৈরির জন্য আরও ৫২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মেদিনীপুর-বাঁকুড়া রেলপথটি কুবদা ও কদমডিহা এলাকায় জাতীয় সড়কের বুক চিরে চলে গিয়েছে। ওই দুই জায়গায় রেল ক্রসিং থাকায় দূরপাল্লার ট্রেন ও মালগাড়ি যাতায়াতের জন্য বেশিরভাগ সময় রেল গেট বন্ধ থাকে। তখন বাস, লরি-সহ বিভিন্ন যানবাহন সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। যানজটের ফাঁসে নাকাল হন যাত্রীরা। রেল ক্রসিংয়ের কাছে এঁকেবেঁকে যাওয়া জাতীয় সড়কটিও বেশ অপরিসর। ফলে, প্রায়ই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে। রাজ্য পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগের (ভুক্তি-২) এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণ চক্রবর্তীও মানছেন, “৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের রেল ক্রসিংগুলির কাছে এবং নদী ও খালের উপর বিভিন্ন সেতু মেরেকেটে ৪-৫ মিটার চওড়া। ফলে যানবাহন যাতায়াতে খুবই সমস্যা হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানানো হয়েছিল। অবশেষে একাধিক প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ হয়েছে।’’
কুবাই ও কদমডিহা রেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুল তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে রাজ্য পূর্ত দফতরের অধীনস্থ জাতীয় সড়ক বিভাগ (সার্কেল-১)। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। ২০১৯ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় সড়ক বিভাগ সূত্রের খবর, কুবাইয়ে উড়ালপুল এবং কুবাই নদীর উপর প্রশস্ত সেতু তৈরির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২৩৬ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। সেতু ও উড়ালপুলটি প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা হবে। অন্য দিকে, কদমডিহায় দু’কিলোমিটার লম্বা উড়ালপুল তৈরিতে খরচ হবে ১০১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভারত মালা’ যোজনায় ওই দু’টি উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে ভাদুতলা থেকে গড়বেতা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিমি রাস্তার মাঝে রয়েছে আরও ৫টি অপরিসর ছোট সেতু এবং গোটা সাতেক কালভার্ট। ওই এলাকাগুলিও দুর্ঘটনাপ্রবণ। সাতটি ছোট সেতু তৈরির জন্য ৪৩ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সাতটি ছোট কালর্ভাটগুলি নতুন করে তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯ কোটি টাকা। প্রতি বছর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ওই সব এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় গড়ে ৫০-৬০ জনের মৃত্যু হয়।