বৃষ্টি ভেজা দিঘা। নিজস্ব চিত্র
চলছে পরীক্ষার মরসুম। দোসর ঘূর্ণিঝড় 'মিগজাউম'। সবে মিলে কার্যত পর্যটক শূন্য সৈকত শহর দিঘা, মন্দারমণি।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের জেরে বুধবার থেকে গোটা উপকূলবর্তী এলাকা জুড়ে আকাশ পুরোপুরি মেঘলা ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘন কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে যায়। শুরু হয় দফায় দফায় ঝিরঝিরে বৃষ্টি। মাঝেমধ্যে সেই বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েও গিয়েছে। এ দিন সকাল থেকে ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা ছিল শুনশান। সমুদ্র সৈকতের ধারে কয়েকজন পর্যটক সকালে ছাতা মাথায় বেরিয়ে ছিলেন। তবে তাঁরা কেউই সমুদ্রের ধারে ঘেঁষতে পারেননি। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বুধবার থেকে দিঘার ঘাটগুলিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। নুলিয়াদের পাশাপাশি প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। হাওড়ার বালি থেকে বেড়াতে আসা প্রদীপ্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘আবহাওয়া খারাপ দেখেই বেরিয়েছিলাম প্রকৃতিকে উপভোগ করার জন্য। ভেবেছিলাম সমুদ্রে নেমে স্নান উপভোগ করব। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন আমাদের বারণ করেছে। তার জন্য হোটেলে ফিরে যাচ্ছি।’’
এদিন সকালে ওল্ড দিঘায় সৈকতের ধারে বেশ কিছু ডাব এবং খাবারের দোকান খোলা ছিল। তবে বৃষ্টি সামান্য বাড়তি সেইসব দোকানও বন্ধ হয়ে যায়। প্রবীর পাত্র নামে এক ঝালমুড়ি দোকানদার বলছেন, ‘‘সামান্য কিছু পর্যটক ছিল। দুর্যোগের মধ্যেও বিক্রি বাট্টা হবে আশা করি এসেছিলাম। তবে দুপুর পর্যন্ত ফাঁকা পকেটে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।’’ হোটেলগুলিতেও প্রায় একই রকম অবস্থা। ওল্ড এবং নিউ দিঘা জুড়ে হাজার দেড়েক লজ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতি হোটেলে সর্বোচ্চ দু-একজন পর্যটক রয়েছেন। তা-ও যাঁরা আসছেন, তাঁরা সমুদ্র স্নান করতে পারবেন না বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি হোটেলের ঘরে ফিরছেন। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে স্কুলগুলিতে পরীক্ষার মরসুম চলছে। তার জন্য এমনিতেই ফাঁকা ছিল সৈকত। এবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে যাঁদের আসার কথা ছিল, তাঁরাও আসেননি।’’ খাঁ খাঁ করছে মন্দারমণিও। এদিন সেখানেও পর্যটকদের দেখা মেলেনি। কেউ কেউ হোটেলের ঘরে, আবারও কেউ সুইমিং পুলে দিন কাটিয়েছেন বলে জানানচ্ছেন হোটেলের মালিকেরা।