Tourists

ট্রেনে হল দেরি, বেড়াতে যাওয়ার আমেজই নষ্ট পর্যটকদের

ট্রেন চলছে দেরিতে। বাড়ছে ক্ষোভ। কী বলছেন রেল কর্তৃপক্ষ?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৩
Share:

দিঘা স্টেশনে পর্যটকদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

ট্রেন লেট। ফলে হয়রানি পোহাতে হচ্ছে পর্যটকদের। অনেকে ট্রেনের বদলে বেছে নিচ্ছেন বাস।

Advertisement

পর্যটনকেন্দ্র ঝাড়গ্রামে ট্রেনের সংখ্যা সে ভাবে বাড়েনি। তার উপর এখন ট্রেন লেটের দরুণ পৌঁছতে এবং ফিরতে সমস্যা হচ্ছে পর্যটকদের। বহু দশক ধরে ঝাড়গ্রামের লাইফ লাইন হল স্টিল এক্সপ্রেস। সপ্তাহের সাতদিন ট্রেনটি চলে। এ ছাড়া ইস্পাত এক্সপ্রেস ট্রেনটিও ঝাড়গ্রামে থামে। পর্যটকরা মূলত হাওড়া থেকে ভোরের আপ ইস্পাত এক্সপ্রেস অথবা বিকেলের আপ স্টিল এক্সপ্রেস ধরে ঝাড়গ্রামে আসেন। তেমনই ঝাড়গ্রাম থেকে সকালের ডাউন স্টিল অথবা বিকেলের ডাউন ইস্পাত এক্সপ্রেস ধরে ফিরে যান। ডাউন ইস্পাত এক্সপ্রেস ট্রেনটি টিটলাগড় থেকে আসে। ফলে বেশির ভাগ দিনই বিকেলের পরিবর্তে ট্রেনটির ঝাড়গ্রামে পৌঁছতে সন্ধ্যা অথবা রাতও হয়ে যায়।

কলকাতার বাসিন্দা সঞ্চারী ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘কয়েকমাস আগে ঝাড়গ্রামে গিয়েছিলাম। ইস্পাত এক্সপ্রেস সকালের দিকে পৌঁছে দিয়েছিল। ফেরার সময় বিকেলের ট্রেনটি সন্ধ্যা সাতটায় ঝাড়গ্রামে আসায় হাওড়া পৌঁছেছিলাম রাত ১১টায়।’’ এ ছাড়া রাঁচি-হাওড়া ইন্টারসিটি এবং হাতিয়া-হাওড়া ক্রিয়াযোগা এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টি ঝাড়গ্রামে থামে। শালিমার-কুরলা লোকমান্য তিলক এবং হাওড়া-জগদলপুর সমলেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টিও ঝাড়গ্রামে স্টপ দেয়।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কলকাতা থেকে বেশিরভাগ পর্যটক ট্রেনে ঝাড়গ্রামে আসেন এবং ফেরেন। কিন্তু দূরপাল্লার ট্রেনগুলি এত লেট করে যে সেগুলিতে টিকিট বুক করলে ভোগান্তি হয়।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের জনপ্রিয়তম পর্যটনস্থল দিঘা ও মন্দারমণি। কোলাঘাট পেরিয়ে ১১৬ বি জাতীয় সড়ক ধরে পৌঁছনো যায় সৈকত শহর দিঘা বা মন্দারমণিতে। ট্রেনে কলকাতা থেকে দিঘা যেতে হলে হাওড়া থেকে স্লিপার ক্লাসে রিজার্ভেশন ভাড়া লাগে ১২০ টাকা। সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। এ ছাড়াও রয়েছে লোকাল ট্রেন। দিঘা -শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলছেন,‘‘বেশ কিছু জায়গায় সড়ক পথের অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। তাই পর্যটকেরা ট্রেনে চেপে দিঘা বেড়াতে যান। পুজোর সময় অতিরিক্ত পর্যটক তো হবেই। তার জন্য আমরা দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ ট্রেন চালানোর দাবি রেখেছি।’’ পূর্বের আরেকটি পর্যটনস্থল মহিষাদল। খড়গপুর-পাঁশকুড়া- হলদিয়া সাউথ ইস্টার্ন প্যাসেঞ্জার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সরোজ ঘড়া বলছেন, ‘‘মহিষাদল স্টেশনে ট্রেন পৌঁছতে দেরি করলে সেখান থেকে যেসব যানবাহনে চেপে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের পৌছতে হয় তা পাওয়া যায় না। এর ফলে কিছুটা হয়রানি শিকার হতে হয় পর্যটকদের।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরে গনগনিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন বেলুড়ের বাসিন্দা অরিন্দম চক্রবর্তী। সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে হাওড়া-পুরুলিয়া রূপসী বাংলা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত আসনে উঠেছিলেন তাঁরা। সেই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও অস্বাভাবিক দেরিতে চলায় সে দিন তাঁরা গনগনিতে যাওয়ার জন্য গড়বেতা স্টেশনে নেমেছিলেন নির্দিষ্ট সময়ের ঘন্টা আড়াই পরে। খড়্গপুর-আদ্রা শাখায় বেশিরভাগ ট্রেন বেশ কিছুদিন ধরে অস্বাভাবিক দেরিতে চলায় ভোগান্তিতে পড়ছেন গনগনিতে আসা পর্যটকেরা। ট্রেনের ভরসা না করে 'লং জার্নি' করে আসতে হচ্ছে অনেককেই। অনেকে ছোট গাড়ি ভাড়া করে আসছেন। এতে খরচ ও সময় দুই বেশি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পর্যটকেরা।

(তথ্য সহায়তা: কিংশুক গুপ্ত, কেশব মান্না, রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য, আরিফ ইকবাল খান)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement