tourism

সন্ত্রাসের নেতাইয়ে পর্যটনের হাতছানি

কংসাবতীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সবুজ আনাজ খেতের মাঝে অবসর কাটানোর পাশাপাশি লালগড় ও রামগড়ের দর্শনীয় জায়গাগুলি ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লালগড় শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৮
Share:

নেতাই গ্রামে অতিথিশালা।

জঙ্গলমহলের পর্যটনের প্রসার হচ্ছে। তবে বেলপাহাড়িকে তুলে ধরা হলেও বরাবরই ব্রাত্য লালগড়— এমনই অভিযোগ। অথচ লালগড়ে রয়েছে পুরনো স্থাপত্যের নিদর্শন থেকে নিসর্গের সৌন্দর্য। তাই বেসরকারি স্তরে লালগড়ের পর্যটনকে তুলে ধরতে উদ্যোগী হলেন স্থানীয়রাই। নেতাই গ্রামে বেসরকারি উদ্যোগে চালু হল অতিথিশালা। নাম ‘বনঝর্না’।

Advertisement

সন্ত্রাসের সূত্রেই নাম আসে নেতাইয়ের। তবে গোটা এলাকায় দর্শনীয় স্থান নেহাত কম নয়। কংসাবতীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সবুজ আনাজ খেতের মাঝে অবসর কাটানোর পাশাপাশি লালগড় ও রামগড়ের দর্শনীয় জায়গাগুলি ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। নেতাই গ্রামে ঢোকার মুখে তৈরি হয়েছে তিনতলা অতিথিশালাটি। মালিক নেতাই গ্রামেরই বাসিন্দা বাণীবিকাশ পাল। পেশায় ব্যবসায়ী বাণীবিকাশ জানাচ্ছেন, প্রতি বছর মরসুমে বহু পর্যটক ঝাড়গ্রামে আসেন। কিন্তু তাঁদের বেশিরভাগই ঝাড়গ্রামের আশেপাশ ঘুরে দেখেন, চিল্কিগড় ও বেলপাহাড়িতে যান। পর্যটকরা যাতে এ বার লালগড়েও আসেন, সেই লক্ষ্যেই অতিথিশালা নির্মাণ।

২০১১ সালে এই গ্রামেই গুলি চালানোর ঘটনায় মৃত্যু হয় চার মহিলা-সহ ৯ জন গ্রামবাসীর। গ্রামের ভিতরে সেই ঘটনাস্থলে শহিদবেদিতে প্রতি বছর ৭ জানুয়ারি শহিদ স্মরণ দিবস পালন করা হয়। বাণীবিকাশ বলছেন, নেতাই মানেই সন্ত্রাস নয়। কংসাবতীর তীর লাগোয়া নেতাই গ্রাম শস্যশ্যামল এলাকা। ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু-সহ নানা আনাজ চাষ হয়। এমন পরিবেশে এসে পর্যটকদের ভাল লাগবে। লালগড় ব্লক সদর থেকে নেতাইয়ের ওই অতিথিশালাটির দূরত্ব প্রায় দু’কিলোমিটার। অতিথিশালায় গাড়ির ব্যবস্থাও রয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় লোকসংস্কৃতি গবেষক পঙ্কজকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘লালগড়ের পর্যটনকে তুলে ধরার জন্য সরকারি স্তরে সে ভাবে আজও উদ্যোগ হয়নি। তাই বাণীবিকাশের এমন উদ্যোগের পাশে রয়েছেন স্থানীয়রা। অতিথিশালায় স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হয়েছে।’’ বাণীবিকাশ জানাচ্ছেন, অতিথিশালায় একসঙ্গে ৪০ জন থাকতে পারবেন। পরে পরিকাঠামো আরও বাড়ানো হবে। ২১ ডিসেম্বর অতিথিশালার দ্বারোদ্ঘাটনের পরে ইতিমধ্যেই ঘর বুকিং শুরু হয়েছে। বাণীবিকাশ বলছেন, ‘‘আমি ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অতিথিশালা বানাইনি। ন্যূনতম ভাড়ায় এখানে পর্যটকরা খাওয়া দাওয়া-সহ থাকতে পারবেন। প্রতিটি ঘরের সঙ্গে আধুনিক শৌচাগার ও রান্নাঘরও রয়েছে। পর্যটকরা ইচ্ছে করলে স্থানীয় খেতের টাটকা আনাজে নিজেরাও রান্না করতে পারেন।’’ এমনকী ঘর ভাড়া না নিয়েও পর্যটকরা অতিথিশালায় খাওয়াদাওয়া করতে পারবেন।

ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মধসূদন কর্মকার বলছেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। উপযুক্ত থাকার জায়গা হওয়ায় পর্যটকরাও লালগড়ে যেতে আগ্রহী হবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement