অভিষেকের কাছে প্রসেনজিতেরা। নিজস্ব চিত্র
প্রতিমা দর্শন শেষ। এ বার শুরু হয়েছে দিদি দর্শন! কালীঘাটে ছুটছেন জেলার নেতানেত্রীরা। দিদিকে বিজয়ার প্রণাম জানাতে। জেলায় ফিরে অনেকে আবার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্বের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছেন।
জেলা তৃণমূলের নেতাদের কেউ শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত। কেউ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী। বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্বেও এটা বজায় রয়েছে! দলের এক সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় গিয়েছিলেন এ জেলার তৃণমূল বিধায়কেরা। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ প্রমুখ। বিধায়কেরা কালীঘাটে গিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। বিজয়ার প্রণাম জানান।
পরে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা। একই দিনে কলকাতায় গিয়েছিলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মাল্য চক্রবর্তী প্রমুখ। দলনেত্রীর পাশাপাশি প্রসেনজিতরা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। দলের বিধায়কেরা যে কালীঘাটে গিয়েছিলেন তা মানছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত। তাঁর কথায়, ‘‘দিদিকে বিজয়ার প্রণাম জানাতেই আমরা ওখানে গিয়েছিলাম। দিদির সঙ্গে দেখা হয়েছে। কথাও হয়েছে।’’ ঐক্যের বার্তা দিতেই কি জেলার বিধায়কদের একসঙ্গে কালীঘাটে যাওয়া? অজিতের জবাব, ‘‘আমরা সকলে মিলে যাব বলেই ঠিক করেছিলাম। সেই মতোই গিয়েছি।’’
বৃহস্পতিবার কলকাতায় গিয়েছিলেন অজিত, প্রসেনজিতরা। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার হলদিয়ায় ছুটে গিয়েছেন রমাপ্রসাদ গিরি, স্নেহাশিস ভৌমিক, সুনীল কর প্রমুখ। লোকসভা ভোটের পর রমাপ্রসাদ বিজেপি- শিবিরে ভিড়েছিলেন। শুভেন্দুর হাত ধরে ফের তৃণমূলে তাঁর প্রত্যাবর্তন হয়েছে। তিনি এখন শুভেন্দু- অনুগামী বলেই পরিচিত। মেদিনীপুর শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি স্নেহাশিসও শুভেন্দু- অনুগামী বলে পরিচিত। সুনীল দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতা। শুভেন্দুপন্থী বলেই পরিচিত। রমাপ্রসাদ মানছেন, ‘‘হলদিয়ায় গিয়ে দাদার (শুভেন্দু) সঙ্গে দেখা করেছি। দাদার আর্শীবাদ নিয়েছি।’’ গতবার তো দিদির কাছে গিয়েছিলেন। এ বার যাবেন না? রমাপ্রসাদের জবাব, ‘‘শীঘ্রই যাব!’’
গতবার বিজয়ার প্রণাম জানাতে চুপিসাড়ে দলনেত্রীর কাছে গিয়েছিলেন নির্মল ঘোষ। পেয়েছিলেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ। দলের অনেকে মনে করেন, মমতার স্পর্শেই পূর্তে নির্মল ছোঁয়া লেগেছিল। এ বার কালীঘাটে গিয়ে দিদি দর্শনের পরে জেলার এক তৃণমূল বিধায়ক ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘‘কথা বলে মনে হল, দিদি আমার কাজকর্মে খুশিই! মনে হচ্ছে বিধানসভার টিকিটটা কনফার্ম!’’
জেলায় ফিরে অনেকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্বের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছেন। গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী যেমন সুব্রত বক্সীর সঙ্গে তাঁদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন। ছবির উপরে লিখেছেন, ‘শুভ বিজয়ার প্রণাম নিতে আমরা সবাই একসাথে’। আবার এক শুভেন্দু অনুগামী শুভেচ্ছা বিনিময়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন। ছবির উপরে লিখেছেন, ‘দাদার আশীর্বাদ নিতে’। নির্মাল্য তো অভিষেকের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের ছবিকে তাঁর ফেসবুকের ‘প্রোফাইল পিকচার’ বানিয়ে ফেলেছেন। জেলার নেতানেত্রীদের গতিবিধিই বলে দিচ্ছে, প্রতিমা দর্শন শেষ হলেও দিদি দর্শন আপাতত শেষ হচ্ছে না!