জমি খালি করতে ভাঙা হচ্ছে তৃণমূল কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র।
এক আদিবাসী সিপিএম সমর্থকের পাট্টা পাওয়া জমি দখল করে দলীয় কার্যালয় তৈরি করেছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে কার্যালয়টি ভেঙে দিয়ে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হল অনন্ত মাহালি নামে ওই সিপিএম সমর্থককে।
লালগড় থানার রামগড় অঞ্চলের আউলিয়া গ্রামের ঘটনা। বাম জমানায় এক একর জমির পাট্টা পেয়েছিলেন ভূমিহীন অনন্তবাবু। ওই জমিতে মাটির চালা বাড়ি তৈরি করে বসবাস করতেন তিনি। বছর দু’য়েক আগে বর্ষায় মাটির চালাঘরটি ভেঙে যাওয়ায় তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। মাস তিনেক আগে অনন্তবাবুর জমিতেই তৃণমূলের কার্যালয় তৈরি হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে অনন্তববাবু প্রশাসনের স্থানীয় মহলে অভিযোগ করেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। উল্টে গ্রামের কিছু লোকজন তাঁকে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপর অনন্তবাবু রাজ্যপাল, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, এসসি-এসটি সেল-সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগপত্র দেন।
এরপরই রাতারাতি একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে যায়। দেখা যায় শাসক দলের অন্য ভূমিকা। গত বুধবার তৃণমূলের লোকজন পে-লোডার দিয়ে দলীয় কার্যালয়টি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। অনন্তবাবুকে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, অনন্তবাবু রাজ্যের প্রশাসনিক ও সাংবিধানিকস্তরে অভিযোগ পাঠানোর ফলে শঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। আদিবাসীর জমি দখল করার অভিযোগে বিভাগীয় তদন্তের আশঙ্কায় তড়িঘড়ি দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যালয়টি ভেঙে দেওয়া হয়। যুব তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি তন্ময় রায় বলেন, “অনন্তবাবুর পাট্টা পাওয়া জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি জানার পরে দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ওই জমি অনন্তবাবুর।”
সিপিএমের লালগড় লোকাল কমিটির সম্পাদক অর্জুন মাণ্ডি বলেন, “একজন আদিবাসীর বৈধ জমি কখনও দখল করা যায় না। শেষ পর্যন্ত শাসক দলের উদ্যোগে ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অনন্তবাবু জমি ফেরত পেয়ে গিয়েছেন। উনি অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।”