এ ভাবেই পতাকা উত্তোলন করা হয় রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
তিলকা মুর্মু মাজির মূর্তি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিধায়ক তুললেন ভারতের উল্টো জাতীয় পতাকা। যা নিয়ে বিতর্ক বাধল। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্টও করা হল। পতাকার অবমাননার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
রবিবার নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর পঞ্চায়েতের ফুলগেড়িয়াতে আদিবাসী জনজাতিদের শহিদ তিলকা মুর্মু মাজির পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচনের অনুষ্ঠান হয়। তৃণমূলের এসটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সহযোগিতায় ছিল ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট। এরপর মূর্তির কাছেই পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর দেখা যায় তা পতাকা সঠিকভাবে নেই। পতাকা তুলে নমস্কার জানিয়ে চলে আসেন বিধায়ক। মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানের সভায় যোগ দেন। পরে পতাকা উত্তোলনের সেই সময়ের ভিডিও বিধায়ক নিজেও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন। তারপরেও পতাকাটি সংশোধন করা হয়নি। স্থানীয় ও অন্যান্যরা জানাচ্ছেন, ভারতের জাতীয় পতাকা উল্টো তোলা হয়েছে। তিনটি রং সমান্তরাল ছিল না, উলম্ব দিকে ছিল। যা বিসদৃশ লেগেছে। তাদের বক্তব্য, ‘‘বিধায়ক কিংবা অন্য কারোর চোখে পড়ল না বিষয়টি! বিধায়ক পতাকা তুললেন অথচ দেখলেন না কোন পতাকা, কীভাবে তুললেন।’’ বিজেপির বক্তব্য, বিধায়কের বিরুদ্ধে দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার জন্য আইনি পদক্ষেপ হওয়া উচিত। যারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন তাদের ওপর দায় চাপিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওখানে ওই সমাজের অনেক শিক্ষক ছিলেন। হয়ত কেউ ভুল বলছে।’’ পরে তার আরও বক্তব্য, ‘‘কীভাবে হয়েছে বলতে পারব না। খেয়াল করা হয়নি।’’ তৃণমূলের মকরামপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শীট বলেন, ‘‘কেউ মিথ্যে প্রচার করছে। বিষয়টি আমাদের নজরে নেই।’’ অপরদিকে এই অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় যারা ছিলেন তাদের নেতৃত্ব রবি সরেন বলেন, ‘‘আমরা অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছিলাম। নিজেও উপস্থিত ছিলাম না। তবে এমন বিষয়টি ঠিক নয়। যারাই করুক ভুল করেছে।’’
খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিজেপি। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরীশংকর অধিকারী বলেন, ‘‘রাজ্যের বিধায়ক যদি দেশের পতাকার প্রতি এমন অসম্মান করেন তাহলে সাধারণমানুষ কি করবেন। এদের মধ্যে বিন্দুমাত্র দেশপ্রেম নেই। পুলিশের উচিত পতাকার অসম্মানের জন্য বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা।’’ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সমাজমাধ্যম থেকে উল্টো পতাকা উত্তোলনের ভিডিয়ো ডিলিটও করা হয়নি।